নাজিয়া নাসরিন আহমাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বিডিনার্সিং২৪.কম
২৪ মার্চ, ২০২১
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যৌন নিপিড়নের শিকার হয়ে ‘প্রতিকার চেয়ে’ বদলির আদেশ পাওয়া সেই নার্স অবশেষে মামলা দায়ের করলেন। গতকাল ২২ মার্চ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
প্রায় ১০ মাস আগে ওই নার্স সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। ঘটনার দিন তিনি আইসিইউতে কর্তব্যরত অবস্থায় সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মামুন অর রহমান তাকে যৌন হয়রানি করেন। পরদিনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেন ওই চিকিৎসক।
ভুক্তভোগী নার্স কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করলে ২০ জানুয়ারি অভিযুক্ত চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গঠনকৃত কমিটি ১০ ফেব্রুয়ারী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
মামলার আসামির নাম মামুন-অর-রহমান। তিনি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। অভিযুক্ত মামুন বর্তমানে ছুটি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা করছেন। ওই কোর্স সম্পন্ন করতে এসেছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই তিনি নার্সকে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নার্স।
ওই নার্স অভিযোগ করেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত চিকিৎসক মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো প্রতিবেদনে চিকিৎসককে ক্ষমা করে দেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনের একটি কপি হাসপাতাল পরিচালক বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে পাঠান। অধিদপ্তরও আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে,যাদের তদন্ত এখন চলমান রয়েছে।
এরই মাঝে ১৮ মার্চ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হাই ও মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারের স্বাক্ষরকৃত নোটিশে ওই নার্সকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। তাকে ২৪ মার্চের মাঝে কর্মস্হলে যোগদান করতে বলা হয়। তাছাড়া তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হওয়ার কথা বলা হলেও বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরদিনই বদলির আদেশটি বাতিল করা হয়।
নার্সের পক্ষে আইনজীবী শারমীন কানিজ ট্রাইবুনালে মামলার আবেদন দাখিল করেন। তিনি বলেন, “আদালত মামলার আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন বিচারক। আগামী ২০ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।”