সিনিয়র রিপোর্টারঃমরিয়ম আক্তার,চাঁদপুর।
মহামারি করোনার একটি প্রতিষেধক তৈরির জন্য যখন বিশ্বজুড়ে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা, তখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের কপালে একটি শঙ্কা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। তাদের শঙ্কা, করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রাণ দিতে হতে পারে প্রায় পাঁচ লাখ হাঙ্গরকে।
ভ্যাকসিন তৈরির যে চেষ্টা চলছে, সেগুলোর কয়েকটিতে স্কোয়ালিন নামে এক ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে। স্কোয়ালিন হলো প্রাকৃতিক তেল, যা হাঙরের যকৃতে তৈরি হয়। বর্তমানে ওষুধে সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই তেল। শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির মাধ্যমে এই তেল কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় ভ্যাকসিনের।
ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন এখন ফ্লু ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে স্কোয়ালিন ব্যবহার করছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা করোনা ভ্যাকসিনে সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য স্কোয়ালিনের একশো কোটি ডোজ তৈরির লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে। এক টন স্কোয়ালিন পেতে প্রায় তিন হাজার হাঙরের প্রয়োজন হয়।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা ‘শার্ক অ্যালায়েজ’ হিসাব কষে বলেছে, সমগ্র বিশ্বের জনগোষ্ঠীকে যকৃতের তেলের উপাদানসহ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের একটা ডোজ দিতেই আড়াই লাখ হাঙ্গর মারা পড়বে।
তবে এ ক্ষেত্রে নির্ভর করছে স্কোয়ালিন কী মাত্রায় ব্যবহার করা হতে পারে। জনগোষ্ঠীকে দ্বিতীয়বার ভ্যাকসিনের ডোজ দিতে গেলে ওই সংখ্যাটা কম বেশি দ্বিগুণ অর্থাৎ ৫ লাখে দাঁড়াবে বলে শঙ্কা তাদের।
অবশ্য হাঙ্গরের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা স্কোয়ালিনের বিকল্পও পরীক্ষা করে দেখছেন। বিকল্প হিসেবে আখ থেকে তৈরি সিন্থেটিক স্কোয়ালিন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
শার্ক অ্যালায়াজের প্রতিষ্ঠাতা স্টিফনি ব্রেন্ডিল বলছেন, বন্যপ্রাণীদের মেরে কোনো কিছুর ব্যবহার দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বিশেষ করে হাঙরের সংখ্যা খুবই কম। এ জন্য তিনি বিকল্প খোঁজার ওপর জোর দিয়েছেন।