নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজ, দিনাজপুর এর অধ্যক্ষ তাজমিন আরার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নার্সিং এবং মিডওয়াইফারি কলেজ দিনাজপুর এর অধ্যক্ষ তাজমিন আরার বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ছবিঃ অধ্যক্ষ তাজমিন আরা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজ দিনাজপুর শিক্ষার্থীরা জানান অধ্যক্ষ তাজমিন আরা ছাত্র ছাত্রীদের সাথে অমানুষের মতো হয়রানিমূলক আচরন করেছেন। বিডিনার্সিং২৪ এর এই প্রতিবেদকের কাছে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা হয়রানি বন্ধে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নিচে শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
১) করোনা পরবর্তী কলেজের পরিষ্কার পরিচ্ছনতা ছাত্রীদের দ্বারা কাজ করিয়ে নেওয়া। পরিচ্ছনতা কর্মী থাকার পরেও ডাইনিং হল,কিচেন, ছাত্রীদের দ্বারা কাজ করিয়ে নেওয়া।
২) সামান্যতম ভূলে, ইনচার্জের মতের বাইরে কোন মতামত দিলে বা ইচ্ছা পোষন করলে রেজিষ্ট্রেশন বাতিলের হুমকি দেওয়া।
৩) বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বাংসরিক অনুষ্ঠান থেকে ছাত্র ছাত্রীদের বঞ্চিত করা।
৪) কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে ইনচার্জের বিবাহিত ছেলেকে মাঝে মাঝেই রাত্রী কালে ঘোরাফেরা করতে দেখতে পাওয়া।
৫) সাক্ষাৎকালীন সময়ে অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ করা। বকাঝকা করা। অবিভাবকের সামনে শিক্ষার্থীদের অপমান করা এবং শিক্ষার্থীদের সামনে অবিভাবকদের অপমান করা।
৬) ছাত্রছাত্রীদের মতামতের গুরত্ব না দিয়ে সকল কার্যক্রম নিজের ইচ্ছেমতো পরিচালনা করা।
৭) হোস্টেল মেস নিজ ইচ্ছামতো পরিচালনা করায় অনিয়ম: রান্নাঘরে ছাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার, ডায়েট মানিতে অনিয়ম,
৮) হোস্টেলে ছাত্রীদের নিরাপত্তার অভাব : সাম্প্রতিক মোবাইল চুরি এবং সিসিটিভি ক্যামেরায় চোর ধরা পড়ার পরেও প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ না নেওয়া।
৯)শিক্ষার্থীদের পরিবারের কোন সদস্য (বাবা,মা) অসুস্থ হলে ছুটি মঞ্জুর না করা, এবং শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করা।
১০) যেখানে একজন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে মাতৃত্বমূলক সম্পর্ক থাকার কথা সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের জারজ সন্তান বলা এবং কটুক্তিমূলক ভাষা ব্যবহার করা।
১১) উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কলেজে পরিদর্শন করতে আসলে ছাত্রছাত্রীদের সাথে ক্ষনিক সময়ের জন্য ভালো আচরন করা এবং পরবর্তিতে আবারও খারাপ আচরন করা।
১২) ছাত্রছাত্রীদের সামনেই অফিসরুমে জোর গলায় ঝগড়া করা যা ছাত্রছাত্রীদের মানসিকতার বিরুপ প্রভাব হওয়া।
১৩) অফিসে কর্মচারী থাকার পরেও স্টাইপেন্ট/বৃত্তি প্রদানে গাফিলতি ও বিলম্ব করা।
১৪) সামান্য ভূলে ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি কেটে নেওয়া।
১৫) প্রতিমাসের ডায়েট মানি এর হিসাব শিক্ষার্থীদের না দেওয়া।
১৬) হিজাব পরিধানের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত গুরুত্ব না দেওয়া।
১৭) অধ্যক্ষ মহোদয় কলেজ চলাকালীন সময়ে ইউনিফর্ম ছাড়াই স্বাভাবিক পোষাকে ঘোরাফেরা ও অফিস করা।
১৮) রাস্তাঘাটে যে কোন জায়গায় ছাত্রছাত্রীদের সাথে অমানুষের মতো খারাপ আচরন করা।
১৯)কোভিড-১৯ সংক্রান্ত :
সাম্প্রতিক ১৩ই জানুয়ারি ২০২২ থেকে ১৭ই জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫+ জনের শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া যায়। কিন্তু তাদের সংকটকালীন সময়ে তাদের কোন চিকিৎসার দায়িত্ব না নিয়ে কলেজ গেট থেকে অমানুষের মতো আচরণ করে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়,,,এছাড়াও অনেকেই অসুস্থ থাকার সত্ত্বেও পরীক্ষা কার্যক্রম চালূ রেখে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের দ্বারা মানষিক নির্যাতন বন্ধে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তাদের দাবি, অতিদ্রুত অধ্যক্ষের অনিয়মের সঠিক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হোক। অতিদ্রুত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।