লেখকঃ ফয়সাল ফারাবী, বিএসএমএমইউ
কোন নামে পরিচয় দিতে পারলে মানুষ আমাকে এমন নামে ডাকবে যে নামটি শুনলে শরীরের শক্তি বড়ে যায়! নির্ঘুম রাতেও চোখের সামনের সবকিছু ঝাপসা দেখতে হয় না। ক্লান্তি সব গা ঝাড়া দিলে ধুলোর মতো ঝরে পড়বে?
দ্বিতীয় শ্রেণীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সময় চতুর্থ শ্রেনীর লোকেদের কাছ থেকেও উগ্র মেজাজ এর মুখোমুখি হতে হয়েছে এই প্রফেশনের কারো কারো। এরকম অসংখ্য আনএক্সপেক্টেড ঘটনা ঘটে এখানে। কারো দৃষ্টিগোচর হয় না। ( আই ওয়ান্ট টু বি সাইলেন্ট হেয়ার 🤐)।
কিছু কিছু নার্স তার নামের আগে বা পরে নার্স শব্দটি বসানোরও যোগ্যতা রাখে না। এমন অনেক দেখেছি। ( অলসো আই ওয়ান্ট টু বি সাইলেন্ট হেয়ার🤐🤐)
আমি হয় সত্য বলি না হয় চুপ থাকি। এটা আমার অভ্যাসগত কিংবা জিনেটিক কারণে হয়ে থাকে। গ্রেগর জোহান মেন্ডেল বেচে থাকলে এবং আমার বেপারে ভালোমত জানতে পারলে তিনি বলতেন জিনেটিক কারণে আমি এরকম। কিন্তু পরিচিত লোকেরা আমার অভ্যাসকেই সরাসরি দোষারোপ করে। অনেকেই এটাকে বদভ্যাস বলে থাকে। কারণ সত্য বলা এবং চুপ থাকার মাঝখানে আরেকটা ঘটনা নতুন নতুন গল্প তৈরি করে কোনোকোনো সময় । আর সেটা হচ্ছে, অস্বাভাবিক এবং অনৈতিক কোনোকিছু চোখের সামনে ঘটতে দেখলে সেখানে আমার ক্রোধের আগুনে শয়তানও ভস্ম হয়ে যায়।
[রেগে গেলে আমার মাথার চুল খাড়া হয়ে যায়, চোখ জ্বালা করে আর স্টেইন গানের মতো মুখ থেকে শব্দ বোমা বের হতে থাকে ( শুদ্ধ ভাষায়😌) ]।
তবে আমি আমার পেশেন্ট কে বকা দেই না। কথা না শুনলে তার সাথে লম্বা সময় গল্প করি। এখানে আমার ধৈর্য্যশক্তি সিদরাতুলমুনতাহা থেকে ফোরাত নদী পর্যন্ত দীর্ঘায়িত। ( 💎আলহামদুলিল্লাহ💎 )
যাই হোক এই যে আমি এবং আমরা মিলে একটা সোসাইটি, এই সোসাইটির প্রায় সবারই একটা বেপারে জানতে চাওয়ার বেশ আগ্রহ আছে। ( বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে ডাটা কালেক্ট করেছি😑)। সেটা হলো, “রেজিটার্ড ফিজিশিয়ান”কে মেডিকেল অফিসার, এমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার, ইনডোর মেডিকেল অফিসার, রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার ( ডক্টরদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি😌) নামে ডাকলে, “রেজিটার্ড নার্স-মিডওয়াউভ” দের কি “নার্সিং অফিসার” বলে ডাকা যেতে পারে?☺
ভালো একটা নামে ডাকলে সবাই খুশি হয়। আমি লক্ষ্য করেছি, আমাদের হোটেলের ছেলেদের পিচ্চি, এই ছেলে, এই বেটা বলে ডাকা কাস্টমার এর চেয়ে নাম ধরে ডাকা কাস্টমাররা সার্ভিস ভালো পেয়েছে। একটু নরম স্বরে ডাকা কাস্টমারগুলো আরো বেশি ভালো সার্ভিস পায়।
কিছু কাস্টমার সম্মোধনটা মার্জিত ভাষায় করেছে।
ফলে কি হয়েছে? সেবা দানকারী এবং সেবা গ্রহণকারী দুজনেই দুজনের সাথে কো-অপারেশন করলো। এবং এতে করে দু পক্ষই সন্তুষ্ট।
প্রয়োজনের খাতিরে মানুষ মানূষের সাথে কথা বলে। কথা ভয়ংকর জিনিস। কথার কারণে হিরোশিমায় লিটলবয় বিস্ফোরিত হয়। কথায় শান্তিচুক্তি সাক্ষরিত হয়। কথার শক্তিতে আয়তাকার শক্তিশালী মানচিত্র থেকে ব-দ্বীপ স্বাধীন হয়। কথার শক্তিতে রোহিঙ্গারা বাংলার ধুলোয় আশ্রয় পায়। কথার যাদুতে রিকশাওয়ালা ত্রিশ টাকার পথ বিশ টাকায় বায়।
সুতরাং কথার সাথে সম্মোধন যোগ করতে হবে। সম্মানিত সম্মোধন।