📝স্টাফ রিপোর্টারঃ
এ.কে.সরকার
🕦 ১৩ জানুয়ারী,২০২১
“নার্স” যার বাংলা অর্থ “সেবিকা”।
নার্স নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে সাদা শুভ্র পোষাক পরিধানকারী একটা অবয়ব।
হতে পারে সে নারী কিংবা পুরুষ ।তবে তার পরিচিতি একটাই, সেখানে কোন লিঙ্গ,ধর্ম,বর্ণ কিংবা জাতের বৈষম্য নেই,তার পরিচয় সে একজন “নার্স”।
মানব সেবাই তাদের প্রধান ধর্ম।প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার।
সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে বিশ্বের অন্য সকল দেশের মত আমাদের দেশও আজ পিছিয়ে নেই।আমাদের বর্তমান সরকার দেশ রত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার দেখানো মানুষের কল্যানার্থে সেই স্বপ্ন দিয়ে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমাদের নার্সদের নিয়েও ইতোমধ্যে নানামুখী উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ করে চলছেন।
আমাদের দেশের নার্সরা অতীতে সামাজিক বৈষম্য এবং যে পরিবেশের সম্মুখীন হয়ে রোগীর সেবা করত,এখন তা অনেকাংশে কমে এসেছে।
সরকারের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, স্বাস্থ্য ও নার্সিং অধিদপ্তর সহ শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন এসেছে এবং সরকার আধুনিক নার্স তৈরীতে ও সোচ্চার ভুমিকা রাখছেন। বিশ্বের সকল উন্নত দেশগুলোতে নার্সদের সর্বোচ্চ সম্মানিত পেশা হিসাবে মনেকরা হয়। সেই দৃশ্যপট থেকে আমরা এখনো অনেকটা পিছিয়ে।
তার প্রধান একটি কারণ হচ্ছে সামাজিক সচেতনতা ও মূল্যবোধের অভাব এবং আধুনিক নার্স তৈরিতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের প্রতি সুদৃষ্টি না দেয়া।
কিছু দিন যাবৎ এরুপ কিছু অলিখিত ও অপ্রত্যাশিত বিধি নিষেধ নার্সদের উপরে চাপানোর চেষ্টা করছেন কিছু বিশেষ ব্যাক্তিবর্গ।
আসলে আমরা এখনও ততটা উন্নত চিন্তাধারার জাতি হয়ে উঠতে পারিনি মানষিক ভাবে, যতটা উন্নতি আমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতায়
অর্জন করে থাকি।
সমাজের একদল মানুষ এখনও প্রায়শ তাদের কার্যকলাপে তার প্রমান দিয়ে যাচ্ছে।
কিছুদিন আগে এমনি অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ও নার্সদের সাথে।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন কর্তৃক নার্সদের সুরক্ষা পোশাক সাদা এপ্রোন পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন, এতে নার্সদেরা প্রতিবাদ করেছেন সর্বস্তরের নার্সরা কুমিল্লা শহরে সুরক্ষা পোষাক পরিধানের দাবিতে এই বিক্ষোভ করেছেন।
নার্সরা জানায় কুমিল্লা সিভিল সার্জন এপ্রোন পরিধানে বাঁধা প্রদান ও বিভিন্নভাবে এপ্রোন না পরার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।
এজন্য সারাদেশের নার্সদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। নার্সরা আরও জানায় অবিলম্বে নার্সদের সুরক্ষা পোষাক তথা সাদাএপ্রোন পড়ার অনুমতি ও সুষ্ঠ কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
কুমিল্লার ঘটনায় স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) এর মহাসচিব ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, এপ্রোন কোনো মেডিকেলীয় পোষাক নয়।
এটি একটি সাদা সুরক্ষা পোষাক (White Protecting Coat)। সাদা এপ্রোন স্বাস্থ্য সেবায় অংশগ্রহনকারী যে কেউ পড়তে পারে।
তাছাড়া নার্সরা কি ড্রেস পরিধান করেছে তা নিয়ে সিভিল সার্জনের বলার কোনো এখতিয়ার নেই।
এজন্য নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর রয়েছে।
এবার আসা যাক অধিদপ্তর নিয়ে,ইদানীং যাবৎ কারিগরি শিক্ষা কে নিয়ে ও অনেক তুলকালাম হলো, কোর্ট এর রায়ে ও যেন সন্তুষ্টি দিচ্ছে না। দিবে কি করে সবার নজর নার্সদের ২য় শ্রেনীতে কেন পদায়ন করা হল, আসলে সুচিন্তার অভাবে থাকার কারনে এক শ্রেনীর লোকেরা আমাদের সমাজের নার্সদের এপ্রোনের পিছনে পড়ে আছে,
এদের বক্তব্য থেকে বুঝা যায় তারা ডাঃ দের পরম বন্ধু কিংবা নিজেই ১ম সারির,
তাই সাদা পোষাক পরিধান তাদের এক চেটিয়া অধিকার।
৩ বছর, ৪ বছর সময় অতিক্রম করা পথের অভিজ্ঞতা জ্ঞান ও দক্ষতা বেশী হবে নাকি ৬ মাস কিংবা ১২মাসের!!?
তবে এরা কিন্তু সব এক সারিতেই বসতে রাজি।
সে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা না করে বিশেষজ্ঞরা নার্সদের সাদা পোষাক এর পিছনে পড়ে থাকা বিষয়টা বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে, এর বেশী আর কিছুই নয়।
যদি ও এমন মানুষিকতার ব্যক্তিবর্গ সমাজের কোন সারির মানুষের কল্যানেই আসার যোগ্যতা রাখে না। এরা মুলত সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী।
এরা বুঝেও কথা বলে না বুঝে ও কথা বলে,
এদের জন্যে সরকারের আধুনিক নার্স তৈরির প্রচেষ্টা এবং সমাজ পিছিয়ে যাচ্ছে।
এমন বিভিন্ন অসংগতিপূর্ন অপ্রত্যাশিত ছোট বড় নানা সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন আমাদের দেশের নার্সরা।
রোগীর সেবা দানে ব্রত এই নার্সদের সম্মানিত করা এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা আমাদের সমাজের তথা সকলের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য।
তাই তাদের পোশাক এবং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্নবৃদ্ধ না করে তাদের পাশে থেকে তাদের কে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার কাজে দৃষ্টি দেয়াটাই শ্রেয়।
কেননা তারাও দেশের সম্পদ।