সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেতন কেন মাফ হবে না!!!

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৮৩৩ Time View

👤স্টাফ রিপোর্টারঃ লিজা খান,ঢাকা।

🕐০৪.০৯.২০২০

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেতন মাফ নেই অভিভাবকদের। বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুলই পুরো বেতন নিচ্ছে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বলছেন করোনায় অনেকের চাকরি চলে গেছে উপার্জন কমেছে। এমন অবস্থায় স্কুলের পুরো বেতন নেয়াটা অমানবিক। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষক ও স্টাফদের খরচ মেটাতেই বেতন নিতে হচ্ছে। করোনায় সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পুরো বেতন নেয়াকে ‘অযৌক্তিক ও অমানবিক’ বলছেন শিক্ষাবিদরা।
করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঢাকার অনেক স্কুল অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। তবে সংখ্যায় তা বেশি নয়। যেসব স্কুল অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে, তারা পুরো বেতন নিচ্ছে। আর যারা ক্লাস নিচ্ছে না তারাও পুরো বেতন বা ৭০/৮০ শতাংশ বেতন নিচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। তারা বলছেন অনলাইন ক্লাসে খুব একটা লাভ হচ্ছে না। আবার ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করতেও পারছে না। করোনায় যেখানে বেশির ভাগ মানুষ আর্থিক সংকটে আছে সেখানে পুরো বেতন নেয়াটা অমানবিক।
অভিভাবকরা জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ ভিডিও করে ছোট ছোট ক্লিপ দিচ্ছে পড়াশুনার জন্য, এতে করে বাচ্চাদের শিক্ষণীয় কিছুই হচ্ছে না। তারা বলেন, প্রতি মাসে স্কুলের বেতন দিচ্ছি তবে শিক্ষকদের বেতন কেন দেয়া হচ্ছে না জানি না। তারা অভিযোগ করে বলেন, জেনারেটর বিল, ফটোকপি বিল নেয়া তবে কেনো নেয়া হচ্ছে তারা জানেন না। অভিভাবকরা বলেন, এই সময় বেতন এবং পরীক্ষার ফি কম হারে নিলে বিবেচনা করতে পারে।
তারা আরও জানান, বেতন ৫০% কমানোর জন্য তিনটি লিখিত অভিযোগ করেছি তবে কোন লাভ হয়নি। অনেক অভিভাবকের চাকরি নেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বন্ধ আছে। আমরা স্মারকলিপি দেয়ার পরও তারা গ্রহণ করেননি। আন্দোলনে মাঝেও অতিরিক্ত ফি চাপিয়ে দিয়েছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
অনেক স্কুল অনলাইনে পরীক্ষা নিলেও পরীক্ষার পুরো ফি নিচ্ছে। বেতনের সঙ্গে উন্নয়ন ফি, ল্যাবরেটরি চার্জ, এমনকি খেলাধুলার ফিও দিতে হচ্ছে। এর প্রতিবাদে রাজধানীর ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল ও ওয়াইডব্লিউসি স্কুলের অভিভাবকরা মানববন্ধন করেছেন এবং অনেকে স্কুলেই স্মারকলিপি দিয়েছেন।
বারবার বলা সত্ত্বেও কোনো লাভ হচ্ছে না, স্কুল কর্তৃপক্ষও কর্ণপাত করছে না। যোগাযোগ করা হলে স্কুল দুটির প্রধানরা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ বলেছেন, ছাত্র-ছাত্রীরা বেতন না দিলে শিক্ষক ও স্টাফদের বেতন দেয়া যাবে না।
আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহানা আরা বেগম জানান, আমাদের হোল্ডিং ট্যাক্স, শিক্ষক, কর্মচারীদের বেতন দিতে হয় ছাত্রদের বেতন থেকে। তিনি বলেন, অনেক শিক্ষকের ছেলে মেয়েরা অনেক স্কুলে পড়াশুনা করেন তাদের বেতন দিতে হয় তা হলে তারা কতটা সমস্যায় আছে। তাদের বেতন না দিলে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন ক্লাস না করিয়ে এভাবে পুরো বেতন নেয়া অযৌক্তিক ও অনৈতিক।
তত্বধায়ক সরকারের সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদাকে চৌধুরী জানান, অনেকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস করছেন তারপরও লাইব্রেরি এবং ল্যাবটেরি ফি নেয়া হচ্ছে এটা মোটেই যুক্তিসংগত নয়। তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত বিপাকে আছে নিম্নমধ্যভিত্ত, মধ্যবিত্তের কথা বাদই দিলাম অনলাইনে যে যুক্ত হচ্ছে তাদের একটি বিশেষ খরচ হচ্ছে।
শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন জানান, টিউশন ফি এর উপরে সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। একটা নীতি মালার আওতায় এনে শতকরা কত ভাগ বেতন থাকতে হবে তা নিশ্চিত করতে হবে।
বেসরকারি স্কুলে বেতনের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102