👤স্টাফ রিপোর্টার :বিভাবরী,ঢাকা
🕢০৬/০৯/২০২০
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সহায়তার অংশ হিসেবে ইউনিসেফ গত ৬ মাসে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) এবং অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামসহ ১ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী ক্রয় করেছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেন, “মহামারির মোকাবিলার অগ্রভাগে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য উচ্চ মানসম্পন্ন পিপিই গুরুত্বপূর্ণ এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচানোর জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম অপরিহার্য।”
বৈশ্বিক সঙ্কট হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী ও সরঞ্জাম ক্রয় ও সরবরাহের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট সামগ্রী ও সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতি, উল্লেখযোগ্যমাত্রায় মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়া। এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার-ইউনিসেফের সহযোগিতামূলক প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এন-৯৫ মাস্ক, সার্জিক্যাল মাস্ক এবং কভারঅলসসহ ৭২ লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের পিপিই সামগ্রীর ক্রয় আদেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রয় আদেশ দেওয়া চিকিৎসা সরঞ্জামগুলোর মূল্য ৫০ লাখ ডলার, যার মধ্যে কোভিড-১৯ রোগীদের জীবন রক্ষায় চিকিৎসা দিতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, ভেন্টিলেটর এবং পালস-অক্সিমিটার রয়েছে। এ পর্যন্ত যেসব সামগ্রী ক্রয়ের আদেশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬৮ লাখ মূল্যের পিপিই সামগ্রী এবং ২১ লাখ ডলার মূল্যের চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।
ইউনিসেফের কেনা কোভিড-১৯ সামগ্রীগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) অনুরোধের ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে এবং বিদেশ- উভয় উৎস থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো সারাদেশে বিতরণের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, “উচ্চ মানসম্পন্ন চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনন্য দক্ষতা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে ইউনিসেফের সরবরাহ করা পিপিই ও চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো দেশের মহামারি মোকাবিলা প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।”
ইউনিসেফের ক্রয় প্রক্রিয়া সততা, নিষ্ঠতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। সব ধরনের পণ্য ক্রয়ে যাতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হয় তা নিশ্চিত করে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অবস্থিত ইউনিসেফের বৈশ্বিক সরবরাহ বিভাগ। এর বৃহদাকারের সরবরাহ কার্যক্রম ‘ভ্যালু ফর মানি’ নিশ্চিত করে কেননা সংশ্লিষ্ট সামগ্রীগুলো প্রতিযোগিতামূলক দামে ব্যাপক পরিমাণে সংগ্রহ করা হয়। ইউনিসেফ তার কেনা পণ্যগুলোর গুণগত মান নিশ্চিতের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। ইউনিসেফের সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও’র মানদণ্ড এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রত্যাশিত মান অনুসরণ করে। তৃতীয় পক্ষের নিরীক্ষাসহ ইউনিসেফের সরবরাহ কার্যক্রম অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক- উভয়ভাবেই পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে, ইউনিসেফ ক্রয় কার্যক্রম থেকে কোনো লাভ করে না। লেনদেনে বেচে যাওয়া যেকোনো পরিমাণের অর্থ সংশ্লিষ্ট সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের ফেরত দেওয়া হয় অথবা সংশ্লিষ্ট সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে নতুন কেনাকাটায় ব্যয় করা হয়।
যেহেতু বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় জাতীয় প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে জোরালো সমর্থন প্রদানে ইউনিসেফ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউনিসেফের কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সামগ্রী ক্রয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ফান্ড, জাপান, সুইডেন, যুক্তরাজ্য এবং বিশ্ব ব্যাংকের উদার সমর্থন ও অবদান রয়েছে। এছাড়াও ইউনিসেফের কোভিড-১৯ মোকাবিলা কার্যক্রমের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে উপর্যুক্ত দাতাদের পাশাপাশি আরও যেসব দাতা উদার সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, দ্য গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র।