সিনিয়র রিপোর্টারঃ- মীম আকন্দ
আবারও নিজেকে একজন নার্সিংবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে প্রমাণ করলেন নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে তিনি দেশের নার্সিং সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস ও শক্তি যুগিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন সর্বমহলের। এবার সারাদেশের নার্সিং কর্মকর্তাদের সুরক্ষায় তিনি তার আন্তরিকতার বহি:প্রকাশ ঘটিয়ে আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
তার সময়পোযোগী উদ্যোগে লকডাউনকালীন সময়ে নার্সিং কর্মকর্তারা নিজ নিজ এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার ভ্যাকসিন নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
সম্প্রতি চীন থেকে আনা সিনোফার্মের টিকা সারাদেশের মেডিকেল ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী এবং বাদপড়া সম্মুখযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। ইতোমধ্যে টিকাদান কার্যক্রমও শুরু হয়। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কঠোর লকডাউনের মধ্যে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে এসে নার্সিং শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এই অবস্থায় গত ২৩ জুন নার্সিং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেন।
ওই পত্রে তিনি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। তার এই পত্রের প্রেক্ষিতে গত শনিবার (২৬ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত পরিচয়পত্র প্রদর্শনপূর্বক স্ব স্ব জেলার ভ্যাকসিন সেন্টারে টিকা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারের আন্তরিকতায় কঠোর লকডাউনের সময়ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের কোভিড ভ্যাকসিন গ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্ব স্ব জেলায় টিকা গ্রহণের সুযোগ না পেলে লকডাউনের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ থেকে বাদ পড়তে বলে মনে করছেন তারা। এই মানবিক উদ্যোগের জন্য এখন সারাদেশের নার্সিং সমাজের প্রশংসায় ভাসছেন সিদ্দিকা আক্তার।
কৃতজ্ঞতা : এদিকে, স্ব স্ব জেলায় কোভিড টিকা গ্রহণের সুযোগ করে দেয়ায় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি শামীমা নাসরিন ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক।
এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, সিদ্দিকা আক্তার শুধু কাগজে-কলমে দেশের নার্সিং সমাজের অভিভাবক নয়। তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন মানবদরদী অভিভাবক। নানা মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েছে তিনি একজন নার্সিংবান্ধব কর্মকর্তা। নার্সিং কর্মকর্তাদের সুখে-দু:খে তিনি যেভাবে পাশে থেকে সাহস ও শক্তি যোগাচ্ছেন তাতে এ পেশার চেহারাই অনেকটা পাল্টে গেছে। মাথার উপরে এমন একজন অভিভাবক থাকায় এখন নার্সিং কর্মকর্তারা মৃত্যুর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে সেবা দিতে কুন্ঠাবোধ করেন।
বিএনএ নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে সর্বাত্মক লকডাউন। এই সময়ে সিদ্দিকা আক্তার নিজ নিজ জেলায় ভ্যাকসিন গ্রহণের ব্যবস্থা না করলে অনেক নার্সিং শিক্ষার্থী টিকা নেয়া থেকে বঞ্চিত হতেন। তার এই মানবিক উদ্যোগ দেশের নার্সিং সমাজ চিরদিন মনে রাখবে।