সিনিয়র রিপোর্টার-নাদিয়া রহমান,ঢাকা
তারিখ -২০.০৯.২০২০
দুশ্চিন্তা কিংবা অবসাদ দূর করতে স্ক্যাল্প ম্যাসাজের জুড়ি মেলা ভার । চুল এবং মাথার তালুর স্বাস্থ্যের জন্যও স্ক্যাল্প ম্যাসাজ বেশ প্রয়োজনীয় এবং আরামদায়ক। আসুন দেখে নেই স্ক্যাল্প ম্যাসাজের বেশ কিছু উপকারিতা।
মানসিক চাপ কমায়
সারাদিনে যত কাজের চাপই থাকুক, দিনের শেষে হাত-পা ছড়িয়ে একটা স্ক্যাল্প ম্যাসাজ নিতে পারলে নিমেষে আপনি হালকা, চনমনে হয়ে উঠবেন। আসলে মানসিক চাপ আমাদের শরীরের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা আর হরমোনের উপর প্রভাব ফেলে। হরমোনের এই ওঠাপড়ার ফলে চুল উঠে যেতে পারে। স্ক্যাল্প ম্যাসাজ নিলে কিন্তু আপনি মুহূর্তে শান্ত হয়ে যাবেন, স্ট্রেসের মাত্রাও সঙ্গে সঙ্গেই অনেকটা কমে যাবে। স্ক্যাল্প ম্যাসাজ সেরোটোনিনের ক্ষরণ বাড়ায় বলে মনে করা হয়। সেরোটোনিন হল একটি কেমিক্যাল তথা নিউরোট্রান্সমিটার যা মনমেজাজ হালকা রাখতে সাহায্য করে৷
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: স্ক্যাল্প ম্যাসাজ নেওয়ার সময় ঘাড় আর কাঁধেও ম্যাসাজ নিতে ভুলবেন না! যাঁরা দিনভর কম্পিউটার আর স্মার্টফোনে মুখ গুঁজে রাখেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এ কথা সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য৷
স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, চুলের গোড়া মজবুত করে
সুস্থ চুলের জন্য সুস্থ স্ক্যাল্প খুবই দরকার কারণ চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছোয় স্ক্যাল্প থেকেই৷ সপ্তাহে একবার তেল ম্যাসাজ স্ক্যাল্প আর্দ্র থাকতে সাহায্য করে৷ অয়েল ম্যাসাজের ফলে স্ক্যাল্প থেকে মৃত কোষও উঠে যায়, যা চুলের পক্ষেও ভালো৷ কারণ স্ক্যাল্প শুষ্ক হলে বা তাতে আঁশের মতো মৃত কোষ থাকলে চুল ওঠার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে৷
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: বেশিরভাগ মেয়েই তেল ম্যাসাজের সময় চুলেই মাখেন৷ সেটা না করে স্ক্যাল্পে সরাসরি তেল লাগানো উচিত ৷এবার আঙুলের ডগা দিয়ে হালকা হাতে চক্রাকারে ম্যাসাজ করুন৷
স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে
স্ক্যাল্প ম্যাসাজ মুখে ও মাথায় রক্ত সংবহন বাড়িয়ে তোলে৷ মাথায় অর্থাৎ স্ক্যাল্পের নিচে যে সূক্ষ্ম শিরা-উপশিরাগুলো আছে, ম্যাসাজের ফলে সে সব প্রসারিত হয় এবং হেয়ার ফলিকলে রক্তের সংবহন বাড়ে৷ স্বাভাবিকভাবেই চুলের বৃদ্ধি বেশি হয়৷
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: কপালের দু’পাশে ম্যাসাজ করলে টেনশন কমে এবং মাথায় রক্তের সংবহন বেড়ে যায়৷ কপালের দু’পাশে ছোট ছোট চক্রাকার গতিতে ম্যাসাজ করতে শুরু করুন, তারপর ধীরে ধীরে দু’পাশে ম্যাসাজ করতে করতে উঠতে থাকুন মাথার উপর পর্যন্ত৷ একইভাবে ফিরে আসুন নিচে, আবার একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন৷
ঘুম ভালো হয়
রাতে ঘুমোতে অসুবিধে হলে, ঘুম না হলে শুতে যাওয়ার আগে একটা স্ক্যাল্প ম্যাসাজ নিয়ে দেখতে পারেন! স্মার্টফোন, ল্যাপটপ সহ সমস্ত গ্যাজেট বন্ধ করে দিন, ঘরের আলো কমিয়ে দিন এবং তারপর তেলসহ বা তেল ছাড়াই হালকা প্রেশারের ম্যাসাজ নিন৷ প্রতি রাতে এমন ম্যাসাজ নিলে ঘুম যে আসবেই তা নিশ্চিত হয়েই বলা যায়৷ যাঁরা খুব ক্লান্ত থাকেন, তাঁদেরও বাড়তি এনার্জি জোগাবে এই স্ক্যাল্প ম্যাসাজ৷
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: ১৫ মিনিটের হালকা ম্যাসাজই আপনাকে সারা রাত নিশ্চিন্তে ঘুমোতে সাহায্য করবে৷
স্ক্যাল্প ম্যাসাজ চুলের গোঁড়া মজবুত করে এবং চুল গজাতে সাহায্য করে।
গরম তেল দিয়ে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করলে চুলের ফলিকলগুলো রিল্যাক্স হয়। তালু এবং চুল যত শক্ত অনুভব হবে তত চুল পড়া বেড়ে যাবে।
তাই হাতে যদি সময় না থাকে, তো ১-২ ঘণ্টা চুলে এই তেল রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেললেই হবে। নিয়মিত হেয়ার কেয়ারের মাধ্যমে ঝলমলে চুল নিশ্চিত করতে এই প্রসেস-টা খুবই কার্যকর।
প্রতিদিন তেল দেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সপ্তাহে অন্তত ২দিন তেল দেয়াটা চুলের জন্য উপকারী। তেল ছাড়াও প্রতিরাতে চুল ভালোভাবে আঁচড়িয়ে উপুড় হয়ে ঘাড়ের অংশ থেকে ১০ মিনিট ম্যাসাজ আপনার চুল পড়া একেবারে কমিয়ে দেবে এবং চুলকে করবে আকর্ষণীয়।
সঠিক স্ক্যাল্প ম্যাসাজ চুলের খুশকি রোধ করে, পরিমিত ঘুমে সহায়তা করে এবং মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
যাদের থাইরয়েডের অসুবিধা আছে, তাদের এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে থাকে, সাথে শরীরের সঠিক তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
নিয়মিত স্ক্যাল্প ম্যাসাজ ডিপ্রেশনের সমস্যা দূর করে।
চোখের জন্য স্ক্যাল্প ম্যাসাজের তুলনা হয় না, হাইপারসেন্সিটিভিটি বা নার্ভাসনেস দূর করে।
যাদের মাইগ্রেইন বা মাথাব্যথার অসুবিধা আছে, তাদের জন্য স্ক্যাল্প ম্যাসাজ বেশ কার্যকরী।