স্টাফ রিপোর্টারঃ আফিয়া মারিয়া
তারিখঃ ০৫-০৯-২০২০
ফুড পয়জনিং এমন একটি অবস্থা যা দূষিত খাবার খাওয়ার কারণে বা দূষিত জল পান করার কারণে হয়ে থাকে। খাবারটি ক্ষুদ্র জীবাণু, ক্ষুদ্র পোকা, বা এরকম কোনো প্যাথোজেন বা জীবাণুর দ্বারা দূষিত বা বিষাক্ত হতে পারে।
এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে, কিন্তু সবথেকে বেশি প্রভাব গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল পদ্ধতি বা পরিপাক ক্রিয়ার উপর পরে।
তখন কিছু খেতেও ইচ্ছা করে না. ফুড পয়েজনিংয়ের সময়ে প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হয়, এটা খুবই জরুরী
ফুড পয়জনিং লক্ষণ –
সংক্রমণের উৎসের উপর নির্ভর করে ফুড পয়জনিং-এর লক্ষণগুলো আলাদা আলাদা হয়।
এর লক্ষণগুলো হল-
১) ডায়রিয়া
২) খিদে না হওয়া
৩) পেটে ব্যথা
৪) বমি বমি ভাব বা বমি
৫) ক্লান্তি
৬) জ্বর
৮) মাথা ব্যথা
যখন ফুড পয়জনিং কারণে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তখন এর লক্ষণগুলো হল-
১) ১০১.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি জ্বর
২) তিন দিনের বেশি ডায়রিয়ায় ভোগা
৩) কথা বলা বা দেখার অসুবিধা
ফুড পয়জনিং ঝুঁকি –
১) শিশু, ছোট বাচ্চাদের এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে খাদ্য বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ, এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে।
২) গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে বিপাক এবং বিভিন্ন পরিবর্তনগুলি তাদের শরীরে খাদ্য বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৩) লিভার ডিজিজ, এইডস এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনতে পারে। তাই, দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খাদ্য বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বেশি।
ফুড পয়জনিং জটিলতা
তীব্র ডিহাইড্রেশন খাদ্য বিষক্রিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জটিলতা। গর্ভাবস্থায় খাদ্য বিষক্রিয়া হলে সমস্যা বেশি জটিল হয়। ই কোলি ব্যাকটিরিয়া প্রজাতি হেমোলিটিক ইউরেমিক সিনড্রোম নামক মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে যা কিডনিজনিত সমস্যার সৃষ্টি করে। এছাড়াও, প্রাপ্তবয়স্ক, দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত ব্যক্তি এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এই জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
রোগ নির্ণয় –
একজন চিকিৎসক আক্রান্ত ব্যক্তির বিশদ ইতিহাস, কতদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন, বিভিন্ন লক্ষণ এবং যে খাবারগুলি খেয়েছেন তার উপর নির্ভর করে ডায়াগনোসিস করেন। রোগীর লক্ষণ ও ইতিহাসের ভিত্তিতে খাদ্য বিষক্রিয়ায় ক্ষেত্রে কী দায়ী তা নির্ধারণ করতে একজন চিকিৎসক স্টুল টেস্ট এবং রক্ত পরীক্ষা করেন। খাদ্য বিষক্রিয়ার ফলে কোনও ব্যক্তি ডিহাইড্রেটেড কি না তা দেখার জন্যও মূত্র পরীক্ষাও করা হয়।
চিকিৎসা –
১) খাদ্য বিষক্রিয়া বাড়িতেই চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং এটি সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সমাধান হয়।
২) নিজেকে সারাক্ষণ হাইড্রেটেড রাখুন। শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে ইলেক্ট্রোলাইট জল পান করুন।
৩) লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়ামের কারণে খাদ্য বিষক্রিয়ায় হাসপাতালে ভর্তির থাকলে ইন্ট্রাভেনাস অ্যান্টিবায়োটিক দ্বারা চিকিৎসা প্রয়োজন।
৪) চিকিৎসকরা কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন।
৫) রোগীর অবস্থা যদি খুব জটিল হলে চিকিৎসকেরা শিরার মাধ্যমে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করেন।
ফুড পয়জনিং- এর সময় কী কী খাবেন
১) কলা
২) ভাত
৩) চিকেনের পাতলা ঝোল
৪) সিদ্ধ শাকসবজি
৫) টোস্ট
৬) ফলের রস ডাবের জল
কী কী খাবেন না
১) চর্বিযুক্ত খাবার
২) দুগ্ধজাত খাবার
৩) মশলাদার এবং ভাজা খাবার
৪) উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার
৫) ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে যেতে হবে
ফুড পয়জনিং প্রতিরোধের টিপস:
১) খাওয়া বা রান্না করার আগে সবসময় ফল এবং শাকসবজি ধুয়ে নিন।
২) খাওয়া বা রান্না করার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
৩) দুধ, কলা, ফলমূল বেশি দিন পুরনো হয়ে গেলে খাবেন না, টাটকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৪) জল ফুটিয়ে খান।
৫) কোনও খাবার আঢাকা রাখবেন না। ঠিকমতো ঢেকে রাখুন, নাহলে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ (মশা, মাছি) খাবারে বসে জীবাণু ছড়াতে পারে।
৬) রাস্তার খোলা খাবার খাবেন না।
৭) মাংস রান্নার সময় অবশ্যই দীর্ঘক্ষণ উচ্চ আঁচে রান্না করতে হবে। তাহলে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে।
আরও এরকম স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান পেতে বিডি নার্সিং ২৪ এর সাথে থাকুন,, আমরা আরো নিয়ে আসবো সমস্যা ও তার সমাধান। চোখ রাখুন বিডি নার্সিং ২৪।