বিডিনার্সিং২৪ -২০২০/২১ শিক্ষাবর্ষে পোস্ট বিএসসি ইন নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় সর্বচ্চ ৮৬ নাম্বার পেয়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন ফয়সাল ফারাবী। নার্সিংয়ের অন্যতম বিদ্যাপিঠ মহাখালী কলেজ অব নার্সিংয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন এই তরুণ নার্স।
নতুনদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেছেন তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা। বিডি নার্সিং২৪ এর সাথে তুলে ধরেছেন তার অভিজ্ঞতা। নতুনদের উদ্দেশ্যে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।
ফয়সাল ফারাবী বিডি নার্সিং২৪ কে জানান তার সফলতা ও অভিজ্ঞতার কথা। যারা পোস্ট বিএসসি ইন নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে তাত তাদের উদ্দেশ্যে ফয়সাল ফারাবী বলেন, প্রফেশন রিলেটেড সব পরিক্ষাই অত্যন্ত সহজ হয়। প্রশ্ন প্যাটার্নে প্রায় ৮০ ভাগের মতো প্রশ্নই টেকনিক্যাল সাইড থেকে আসে। বাকি ২০ ভাগ আসে সাধারণ জ্ঞান, বাংলা ও ইংরেজি থেকে।
বঙ্গবন্ধুর জীবনি থেকে এবং রানিং সরকার প্রধান এর বড় সব অর্জন এবং অবদান থেকেও প্রশ্ন আসে।
শতভাগ প্রশ্নই ইংরেজি মাধ্যমে আসে।
পরিক্ষার প্রিপারেশনের বেপারে যদি বলতে হয় তবে আমি বলবো, আমার আলাদা কোনো প্ল্যান থাকে না পরিক্ষার জন্য। পড়া মুখস্ত করা বরাবরই আমার কাছে অপছন্দের বেপার। জানার জন্য পড়েশোনা করেছি সবসময়। পরিক্ষায় ভালো মার্ক পাওয়া যদি আমার পড়াশোনা করার উদ্দেশ্য হতো তবে আমার মার্কশীটে শতভাগ মার্ক থাকতো হয়তো। কিন্তু আমি আজ এই অবস্থানে আসতে পারতাম না।
যারা জানার জন্য পড়াশোনা করে তাদের জন্য সব ধরণের পারিক্ষা সবসময়ই সহজ হয়।
পরিক্ষার আগের রাতে ভালো একটা ঘুম দিবেন। এতে করে মস্তিষ্ক রেস্ট পাবে। সুতরাং পরিক্ষার হলে সে আপনাকে ভালো কিছু উপহার দেবে। অনেক দূর থেকে যারা পরিক্ষা দিতে আসেন তারা একদিন আগে এসে রেস্ট নিবেন। সারারাত একটানা জার্নি করে পরিক্ষা দেয়া পরিক্ষা না দেয়ার চেয়েও বেদনাদায়ক ফলাফল দেয়।
সঠিক সময়ে হলে উপস্থিত থাকবেন এবং এডমিট কার্ডে উল্লিখিত যে সমস্ত জিনিস হলে নিতে নিষেধ আছে তা নিবেন না। যেমন মোবাইল, ক্যালকুলেটর, বা স্মার্ট ওয়াচ। এগুলা নিয়ে গেলে পরিক্ষার হলে আপনাকে একটা এক্সট্রা ঝামেলা পোহাতে হবে। ফলে মস্তিষ্ক উলটাপালটা সিগনাল দেবে।
পরিক্ষার হলে নিজের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করাটা মূখ্য বিষয়। মাথা ঠান্ডা রেখে পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে কিভাবে নিজের পারফরম্যান্স তুলে ধরা যায় তা নিয়ে ভাবা উচিত। হলে গিয়ে আশেপাশের পরিক্ষার্থীর সাথে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এর ফলে মস্তিষ্ক ডিজওরিয়েন্টেড হয়ে যায়। তবে হল পরিদর্শক এর নির্দেশনা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এতে করে ওএমআর শীট পূরণ করা সহজ হবে এবং হলের নিয়ম কানুন সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জন হবে। ওএমআর শীট হাতে পাওয়া মাত্র এডমিট কার্ড দেখে দেখে নিজের রোল নাম্বার লিখতে হবে এবং সতর্কতার সঙ্গে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। শতভাগ সঠিক উত্তর দিয়েও আপনি ওকৃতকার্য হবেন যদি রোল নাম্বার, বা সেটকোড লিখতে ভুল করেন। সেট কোড প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর সঠিকভাবে লিখে ভৃত্ত ভরাট করতে হবে। ওএমআর শীটে কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে দাহিত্বরত হল পরিদর্শক এর সাহায্য নিবেন।
ওএমআর শীট পরিপূর্ণ ভাবে ফিল-আপ না করে উত্তর লেখা শুরু করা যাবে না। রোল নাম্বার, সেট কোড, এডমিট কার্ডের সাথে মিল রেখে সাক্ষর, সবকিছু আরেকবার ভালো করে মিলিয়ে নিবেন।
সেট কোড লেখার পর সমস্ত প্রশ্ন রিডিং পড়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ১ থেকে শুরু করতে হবে। এভাবে যে সমস্ত প্রশ্ন সহজ হবে তা আগে শেষ করতে হবে। ১০০ পর্যন্ত যেগুলো আপনার কাছে সহজ সেগুলোর উত্তরপত্র ভরাট করার পর যেগুলো বাদ রেখেছিলেন সেগুলো পূণরায় মনে করার চেষ্টা করুন। অথবা পাশের কারো কাছ থেকে হেল্প নিন।
আশেপাশের কারো কাছে থেকে হেল্প নিতে গেলে নিবেন শেষের দিকে এবং সাবধানে। প্রশ্ননম্বর বলে উত্তর জানতে চাইবেন না। প্রশ্ন মুখে বলতে হবে। কারণ সেটকোড ভিন্ন হওয়ায় আপনার প্রস্নের দাগ নাম্বারের সাথে তার প্রশ্নের দাগ নাম্বার মিলবে না। তবে পাশের ক্যান্ডিডেট যে উত্তর বলবে তা আপনি হুট করে লিখে ফেলবেন না। এনালাইসিস করতে হবে অথবা না পারলে অন্য কাউকে জিজ্ঞাসা করতে হবে। মিলে গেলে লিখে ফেলুন।
ঘড়ির দিকে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনোভাবেই সময়ের অপচয় করবেন না। লেখা শেষ হলে ভালো করে মেলাবেন এবং সম্পূর্ণ উত্তর দিয়েছেন কিনা তা গুনে নিশ্চিত হবেন। উত্তরপত্র জমা দেয়ার আগে অবশ্যই আরও একবার রোল নাম্বার, সেট কোড, পূর্ণ নাম এবং এডমিট কার্ডের সাথে মিল রেখে সাক্ষর দিয়েছেন কিনা তা পর্যবেক্ষণ করবেন।
উল্লেখ্য ফয়সাল ফারাবি ২০১৯ সালে মিরপুরে সাইক নার্সিং কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি ডিপ্লোমা ইন রেনাল নার্সিং কোর্সে অধ্যায়নরত।