শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

পুদিনার অসাধারণ কিছু গুন

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৫২৩ Time View

👤স্টাফ রিপোর্টার-নাদিয়া রহমান, ঢাকা
🕛তারিখ-২.০৯.২০২০

পুদিনা একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। পুদিনার মূল থেকে শুরু করে ফুল পর্যন্ত – সবই ব্যবহারযোগ্য। প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে পুদিনা। তাই খাদ্য হিসেবে পুদিনা আপাতত অবহেলিত হলেও ওষুধ হিসেবে অবহেলিত নয় মোটেও।বরং যত দিন যাচ্ছে তত গবেষণা হচ্ছে পুদিনা ও পুদিনার মতো ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে, আর ততই মানুষ জানছে এসবের গুণ সম্পর্কে। আর তাই ব্যবহারের আগ্রহও তৈরি হচ্ছে নানা ভেষজ সম্পর্কে।শুধু খাবার আর ওষুধ হিসেবে নয়, রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও পুদিনার রয়েছে যথেষ্ট অবদান।

– রোদেপোড়া ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে পুদিনাপাতার রস ও অ্যালোভেরার রস একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

– পুদিনার শেকড়ের রস উকুননাশক হিসেবে খুবই কার্যকরী, এমনকি পাতাও! পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য চুল হবে উকুনমুক্ত।

-পুদিনা পাতার রস শ্বাসপ্রশ্বাসের নালী খুলে দেয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় ভুগছেন তাদের সমস্যা তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিন এবং তা দিয়ে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন।

-গোলাপ, পুদিনা, আমলা, বাঁধাকপি ও শসার নির্যাস একসাথে মিশিয়ে টোনার তৈরি করে মুখে লাগালে তা ত্বককে মসৃণ করে তোলে।

-পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসের চমৎকারী গুনাগুণ যা পেটের যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে খুব দ্রুত। যারা হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথা কিংবা পেটের অন্যান্য সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা খাবার পর ১ কাপ পুদিনা পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ৬/৭টি তাজা পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খুব সহজে পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে পারেন ঘরে।

– ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস আক্রান্ত স্থানে লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। নতুন কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা। তারপর ধুয়ে ফেলুন। মাস খানেকের মাঝেই দাগ দূর হবে।

– শরীর ঠাণ্ডা রাখার একটি বিশেষ গুণ পুদিনার মধ্যে আছে। গোসলের কিছুক্ষণ আগে পানির মধ্যে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখুন। সেই পানিতে গোসল করলে শরীর ও মন চাঙ্গা থাকে। এছাড়া কয়েক ফোঁটা পুদিনার তেল পানির মধ্যে মিশিয়েও গোসল করতে পারেন।

– পুদিনা ত্বকের যেকোন সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। শুকনো পুদিনা পাতা ফুটিয়ে পুদিনার পানি তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি পানিতে দশ থেকে পনেরো চামচ পুদিনার পানি মিশিয়ে গোসল করুন। এর ফলে গরমকালে শরীরে ব্যাকটেরিয়াজনিত বিশ্রী দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাবেন, কেননা পুদিনার অ্যাসট্রিনজেন্ট গুণ অতুলনীয়। ঘামাচি, অ্যালার্জিও হবে না।

– পুদিনা পাতার রস তাৎক্ষণিক ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে কাজ করে। পুদিনা পাতার রস চামড়ার ভেতর দিয়ে নার্ভে পৌঁছে নার্ভ শান্ত করতে সহায়তা করে। তাই মাথা ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা উপশমে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা যায়। মাথা ব্যথা হলে পুদিনা পাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথায় পুদিনা পাতা বেটে প্রলেপ দিতে পারেন।

পুদিনা পাতাকে আমরা শুধুমাত্র রান্নার স্বাদ বাড়ানোর কাজেই ব্যবহার করে থাকি। সাধারণত অন্য কোনো কাজে আমরা পুদিনা পাতা ব্যবহার করি না। কিন্তু এই পুদিনা পাতা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি। আমাদের নানান ভুলে দেহে বাসা বাঁধা দীর্ঘমেয়াদী কিছু রোগের চিকিৎসায় আমরা এই প্রাকৃতিক মহাঔষধি গাছটি ব্যবহার করতে পারি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102