নার্স হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন নরসিংদী নার্সেস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের
নরসিংদী সদর হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স তাহমিনা আক্তার শিমুর হত্যার অভিযোগে মানববন্ধনের কর্মসূচি পালন করছে নার্সদের সংগঠনগুলো।
আজ সোমবার বেলা ১২ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদী জেলা নার্সেস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন কতৃক আয়োজিত মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন, স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ, সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি এন্ড রাইটস ও স্টুডেন্টস উইংয়ের কয়েকশত নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও অনেক সামাজিক সংগঠন মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে।
আজকের মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন
বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন এর সভাপতি ইসমত আরা পারভীন
স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের মহাসচিব ইকবাল হোসেন সবুজ ঢামেকহা বিএনএ সাবেক সভাপতি কামাল হোসেন পাটোয়ারী সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান জুয়েল, সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি এন্ড রাইটস এর সভাপতি মোঃ মাহমুদ হোসেন (তমাল)। এছাড়াও কুমিল্লা থেকে জয়নাল আবেদীন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মানববন্ধনে বক্তৃতা রাখেন।
উল্লেখ্য গত ৮ই অক্টোবর নরসিংদী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স তাহমিনা সুলতানা শিমুকে (৩২) গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠে তাঁর স্বামী রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে চিনিশপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার এক ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তাহমিনা বেলাব উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের হাড়িসাংগান গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. সুলতান উদ্দিনের মেয়ে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. আলাউদ্দিন মিঠু বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের পরিবারের লোকজন জানান, ২০১৩ সালে তাহমিনা সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি নেন। তারপর ২০১৪ পার্শ্ববর্তী পাটুলী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে রুহুল আমিন মুরাদের সঙ্গে তাহমিনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে টাকার জন্য স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়িসহ পারিবারের লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এ ঘটনায় একবার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে একবছর আলাদা থাকেন তাহমিনা। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের সমঝোতায় সংসার শুরু করলেও টাকার জন্য চাপ কমেনি। এরই মধ্যে সম্প্রতি শ্বশুরকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন, শ্বাশুড়িকে চিকিৎসা করান। তারপরও গত বুধবার রাতে তাকে গলাটিপে হত্যা করেন স্বামী রুহুল আমিন। খবর পেয়ে নিহত তাহমিনার আপন খালা পারুল আফ্রাদ অচেতন অবস্থায় বাড়ি থেকে উদ্ধার নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বড় ভাই আলাউদ্দিন মিঠু বলেন, সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিল। গত ২১ সেপ্টেম্বর নরসিংদী সদর হাসপাতালে যোগদান করে গত ২ অক্টোবর নরসিংদীর বাসায় ওঠে। তার শ্বশুর-শাশুড়ি সব সময় টাকার জন্য নির্যাতন করত। এবার তাকে মেরেই ফেলল।
ঐ দিন নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরী জানান, প্রাথমিক সুরতহালে হত্যার আলামত হিসেবে গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আর নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে।