নিজস্ব প্রতিবেদক: সন্তানের ডাকে প্রথম সারা দেয়া দরদীর নাম মা।এটাই স্বাভাবিক ।কিন্তু কোনো কারণে তার ব্যত্যয় ঘটলে তাসবার নিকটই দৃষ্টিকটু হয় ।
এমনই দেখা দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের আওতাধীন ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালসমূহে ।
দেশের সনামধন্য নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক নার্সিং কলেজ , রাজশাহীর একাধিক চাকুরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের কাছে তথ্য নিয়ে জনা যায় যে, গত ০২.০৬.২০২০ইং তারিখে বিডিজবস অনলাইনে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে গত ১৯.০৮.২০২০ইং তারিখ সরাসরি ভাইবা পরীক্ষায় প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীঅংশগ্রহণ করে। গত ২২.০৮.২০২০ইং তারিখ থেকে অনুষ্ঠিত ভাইবার ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকহাসপাতালসমূহে ইসলামী ব্যাংক নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী ব্যতিরেকে অন্যান্য চাকুরিপ্রার্থীর প্রায় ৪০ জনেরমত নিয়োগপত্র পেতে থাকে। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক নার্সিং কলেজে ভর্তির সময়ে পাশ করার পরে চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
বিষয়টি অবলোকন করে নিজ প্রতিষ্ঠানে নিগ্রহের শিকার হওয়ায় চাকুরিপ্রার্থী ঐসব শিক্ষার্থী ক্রোধে ফেটেপড়েন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায় শুরু থেকেই ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের কিছুউর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলে আসছিল (আন অফিসিয়ালী) যে, ইসলামী ব্যাংকের শিক্ষার্থীদের ইসলামীব্যাংক হাসপাতালসমূহে নিয়োগ দেয়া হবে না।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের ৮ম, ৯ম এবং ১০ম ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী অনকলে ডেইলি বেসিসে ইসলামী ব্যাংকহাসপাতালসমূহে কাজ করে আসছিলেন । তাদের সবার ডিউটি বন্ধ করে আসতে নিষেধ করা হয় । এমনপরিস্থিতিতে চাকুরিপ্রার্থী ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম হতাশা ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।তারাবলছে; যেখানে ভর্তির সময়ে চাকুরী তে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল সেখানে সম্পূর্ণ বয়কটকরার এরকম অযাচিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ কি?
অনেকে বলছেন, আইবিএফ এর চলমান প্রশাসনিক সংকট, অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ই এইরকম হীন এবং হঠকারিতার কারণ বলে মনে করছেন।কেউকেউ বলছেন, এখনকার সমন্বিত (সরকার+আইবিএফ) প্রশাসনের অধিকাংশ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মনে করেনযে যারা ইসলামী ব্যাংক থেকে পড়াশোনা করে বের হয় তারা জঙ্গি, জামায়াত, শিবির প্রভৃতি ।শিক্ষার্থীরাআরো বলেন এরকম হীন চিন্তার করার কোন অবকাশ ই নাই।কারণ এ প্রতিষ্ঠানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, উপজাতি একই সাথে সৌহার্দ্য ও সম্প্রতির সাথে পড়াশুনা করে যাচ্ছেন ।তাদের অনেকেই প্রভাবশালীআওয়ামীপরিবারের সন্তান।
কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসনে রয়েছে বর্তমান সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নজরদারি । তবে কেন এই অযাচিতবিশেষণ।আবার সাবেক অনেক শিক্ষার্থী বলছেন যে, সরকারি নিয়োগের ভাইবাতেও নাকি তাদের বিভিন্নরকমবিশেষণ ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এসব বিষয়কে সামনে রেখে Students Forum-IBNCR এর প্রতিনিধিদল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে চাইলেও তাদেরকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। এনিয়ে বিডিনার্সিং২৪ পক্ষ থেকে আইবিএফ এর চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগের চেস্টা করেও পাওয়া যায়নি ।
এদিকে Students Forum-IBNCR এর প্রতিনিধিদল এহেন পরিস্থিতিতে সুসংগঠিত হয়ে সকল শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সকল সাবেক, বর্তমানসহ সকল শিক্ষার্থী ও নার্সিং সমাজের বিভিন্ন সংগঠনের একাত্মতা ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন ।
খোজ নিয়ে জানা গেছে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালসমূহে নন–রেজিস্টার্ড (জুনিয়র স্টাফ নার্স–পদবী) দিয়েনার্সং সেবা দেয়া হচ্ছে।এছাড়া প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট, ছুটিসহ্, নানা রকম হয়রানির সম্মুখীন করা হয় কর্মরতসিনিয়র স্টাফ নার্সগণদের। এছাড়াও নন–ক্লিনিক্যাল প্রশাসনিক কর্মকর্তা ক্ষমতার দাপট দেখান স্বাস্থ্যখাতেরমহান সেবক–সেবিকার উপর।
সমগ্র বিষয় নিয়ে নার্সিং এর একাধিক সংগঠন ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।তারা আইবিএফ এর এরকম বৈষম্যমূলক আচরণে ক্ষুব্ধ হন এবং এরকম হঠকারিতা থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিআকর্ষণ করেন।
সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি এন্ড রাইটসের মহাসচিব সাব্বির মাহমুদ তিহান বলেন, আইবিএফ থেকে পাশকরা নার্সরা প্রতারনার শিকার হয়েছেন। ভর্তির সময় তারা চাকরির নিশ্চয়তা দেখে ভর্তি হলেও প্রশাসনেরএমন সিদ্ধান্তে আইবিএফ থেকে প্রায় হাজারো নার্স বেকার অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তাই অতিশীঘ্রই তাদেরইসলামী ব্যাংক হাসপাতালগুলোতে নিয়োগ নিশ্চিত করার জোর দাবী জানান।