👤স্টাফ রিপোর্টার:সৈকত চন্দ্র দাস,ঢাকা
⏱️তারিখ:০৬-১০-২০২০
প্রিয় ভগিনী।
বহু বছর আগে এক সময় ক্যাথলিক নানরাই নার্সিংএর কাজ করতেন, বিবাহিত মেয়েরা এই ঝুঁকির কাজটা করতে পারতেন না। মানুষ তাদের ভালোবেসে নার্স সম্বোধন করতেন। একসময় পুরুষরাও এই পেশায় আসেন। তারা হয়ে যান নার্স।
আমার দীর্ঘ মেডিকেল প্রফেশানে নার্সদের সাথে আমাকে খুব নিকট সম্পর্কে কাজ করতে হয়েছে। কারন আমি এনেসথেশিওলজিষ্ট। আমার কাজে ওটি নার্স খুব গুরুত্বপূর্ন। পেশাগত জীবনে আমি পুরুষ এবং মেয়ে দুই জেন্ডারের নার্সদেরই বিপুল ভালোবাসা পেয়েছি। আমি অকুন্ঠ চিত্তে এটা স্বীকার করি। এর একটা কারন আমি বুঝি, কোন একটা কারনে ওটি ও আই সি ইউতে কাজ করা নার্সরা একটু বেশি কর্মঠ আর আন্তরিক হন। আমি এই দুইটা গুন খুব পছন্দ করি। আর যে কেউ তার অভিভাবকের ভালোবাসাটা টের পায়, তা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
তার মানে কি ওটি এবং আই সি ইউর বাইরের নার্সদের আমি ততটা পছন্দ করিনা? করি। সারা জীবনে আমি প্রচুর নার্সের দেখা পেয়েছি যারা মানুষ হিসাবে খুবই চমৎকার গুনাবলীর অধিকারী। আজো তাদের কথা আমার মনে আছে।
এই দেশে চিকিৎসকদের মতই নার্সরাও অত্যন্ত সমালোচিত। কিছু অভিযোগ সত্যি হলেও তাদের একটা বিরাট অংশ খুব আন্তরিকভাবে কাজ করেন, অত্যন্ত পরিশ্রমী এই পেশাজীবিরা এই দেশে যোগ্য সম্মান পাননি বলেই মনে করি। প্রতিটা অভিযোগের বিশ্লেষন করা গেলে এটা পরিষ্কার হতো।
আমাদের আই সি ইউতে কাজ করা নার্সরা শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমার যেই পর্যন্ত অত্যাচার সহ্য করেছেন তা তাদের জায়গায় আমি থাকলে পারতামনা। তাদের কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই আই সি ইউতে কাজ করা ছেলে মেয়েদের অনেকেই এই দেশের একেকজন সম্পদ বলে আমি মনে করি। কি বিপুল মনোবল নিয়ে কোভিডের শুরু থেকে এরা লড়াই করছে তা আমি দেখে যাচ্ছি। ওয়ার্ডের ষ্টাফরাও তাই। আমি ক্ষুদ্র মানুষ। ভালোবাসা ছাড়া তাদের সম্মানিত করার আর কোন উপায় আমার নেই।
প্রিয় ভগিনী ও ভ্রাতাগন, জ্বলে থাকুন আলোক বর্তিকা হয়ে, বিপন্ন মানুষের শিয়রে, যে আলোর শিখা হাতে নিয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেছিলেন তা হৃদয়ে জ্বেলে রাখুন। নিভতে দিবেন না। প্রতিদান আশা করে আপনারা কাজ করবেননা, জানি।
যিনি আমাকে তৈরী হতে সাহায্য করছেন তিনি আই সি ইউ নার্স, মার্লিন। স্থান আই সি ইউ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। অন্য কারো নাম আমি উল্লেখ করছি না, এরা সবাই আমার অনেক স্নেহের মানুষ।
বি.দ্রঃ লেখাটির কিছু শব্দ পরিমার্জিত করা হয়েছে
লেখকঃ ডাঃ শাহজাদ হোসাইন মাসুম
এনেস্থিওলোজিস্ট (কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল)