👤সিনিয়র রিপোর্টারঃ বিভাবরী,ঢাকা
১৯ অক্টোবর স্টেট কলেজ অব হেলথ সায়েন্সেস এর নার্সিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডির কিছু পথশিশুর মাঝে আহার বিতরণ করেন। কলেজটির শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন থেকে এ ব্যবস্থা করা হয়। ফাউন্ডেশনটির নাম “স্বপ্নচূড়া ফাউন্ডেশন”।
উক্ত আহার বিতরন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে কলেজটির বর্তমান শিক্ষার্থী বিভাবরী, মারুফা,বিপ্লব, রায়হান সহ আরো অনেকে।
স্বেচ্ছাসেবী এই ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠা সভাপতি ও কলেজটির ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মামুন জানান,” স্বপ্নচূড়া ফাউন্ডেশন ” -“স্টেট কলেজ অব হেলথ্ সায়েন্সেস ” এর শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত একটি রক্তদান ও সামাজিক উন্নয়ন মূলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনের মূল লক্ষ্য স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে জরুরি সেবা প্রদান, জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।এটি একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক ফাউন্ডেশন । আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের পথশিশুদের মাঝে আহার বিতরণ কর্মসূচী সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে৷ ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে অবহেলিত ও দুঃস্থ মানুষের জন্য আরো কাজ করার ইচ্ছা আছে।সেক্ষেত্রে সকলের সাহায্য ও সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ”
৩য় বর্ষের ছাত্রী বিভাবরী সরকার জানান,” মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ে সবাইকে যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। এই অবস্থায় পথশিশুদের আরও বেশি আর্থিক সংকটময় সময়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা প্রচন্ড খাদ্য সংকটে আছে। এই প্রয়াসে আমরা পথ শিশুদের মাঝে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী পরিচালনা করেছি৷ ”
২য় বর্ষের ছাত্র বিপ্লব হোসাইন জানান,” শিশু,শব্দটাই এক ধরনের ভালোবাসা।যার সাথে মিশে থাকে ভালোবাসা,আদর,মমতা।আমাদের দেশে পথশিশুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।আসলে এর মূলে রয়েছে অজ্ঞতা,দরিদ্রতা,শিক্ষা সচেতনার অভাব।আসুন আমরা সবাই এই অসহায় অবহেলীত শিশুদের পাশে দাঁড়াই।”
১ম বর্ষের ছাত্র রায়হান হাওলাদার জানান,”এই করোনা কালীন অসময়ে; অসহায় এই পথশিশুদের মুখে একবেলা খাবার তুলে দিতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত এবং উচ্ছ্বাসিত। ”
৩য় বর্ষের ছাত্রী মারুফা আক্তার জানান,
“আমরা চাই সুবিধাবঞ্চিত বা পথশিশু শব্দটি বিলুপ্ত হয়ে যাক। এ কোমলমতি শিশুদের জন্য আমাদের উচিত যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসা তা হতে পারে খাদ্য, শিক্ষার আলো, নির্দিষ্ট বাসস্থান, কিংবা সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা।”
এছাড়াও অত্র কলেজের ইন্টার্ন ব্যাচের ছাত্র পার্থ ঘোষ বলেন, “বর্তমান শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত এই ফাউন্ডেশনটির কার্যক্রমে আমি খুবই আশাবাদী। আশাকরি পরবর্তী সময়েও সংগঠনটি অসহায় মানুষের পাশে থেকে তাদের কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা করবে এবং মানুষ কল্যাণে কাজ করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত রাখবে।”
কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ইফতেখার আলম হিমেল বলেন,”সাহসিকতার সাথে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাধুবাদ জানাই। আশা করি এই ফাউন্ডেশনটি ভবিষ্যতে আহার কার্যক্রমের পাশাপাশি পথশিশুদের মাঝে শিক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণ প্রদান করেও পথশিশুদের পাশে থাকবে। ”
অন্যতম প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে ড্যাফোডিল নার্সিং কলেজের লেকচারার জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, “আমি জেনে খুব আনন্দিত যে স্বপ্নচূড়া ফাউন্ডেশনের সদস্যবৃন্দ আত্নমানবতার সেবা, সমাজের অসঙ্গতি, বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়ে ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করেছে । তারই ধারাবাহিকতা অসহায় ও দরিদ্র মানুষের আহারের ব্যবস্থা করা, ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গঠনে ক্ষুদ্র প্রয়াস। সমাজের অার্থিকভাবে সচ্ছল মানুষগন অসহায় মানুষের প্রতি একটু নজর দিলে আমাদের স্বদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়া সহজতর হত। সমাজে বৈষম্য, হানাহানি কমে যেত। ইনশাল্লাহ ফাউন্ডেশনটির নবীন মানবতা প্রেমিক সদস্যদের ক্ষুদ্র প্রয়াস দেশ ও জাতির মঙ্গল বয়ে আনবে আমি বিশ্বাস করি। সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানাই সবাই তাদের কার্যক্রমে শরীক হওয়ার জন্য। আমি ফাউন্ডেশনের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।”