👩সিনিয়র রিপোর্টার-নাদিয়া রহমান,ঢাকা
গ্লুকোমা হলো চোখের একপ্রকার রোগ যাতে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও চোখ অন্ধ হয়ে যায়।
গ্লুকোমা অনেক প্রকারের হয়। যেমন-
ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, নরমাল টেনশন গ্লুকোমা অন্যতম । ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা ধীরে ধীরে হয় ফলে চোখে ব্যথা অনুভূত হয় না। চিকিৎসা না করালে প্রথমে পার্শ্বীয় দৃষ্টি, তারপর কেন্দ্রীয় দৃষ্টি নষ্ট হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়।ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করে হতে পারে।
লক্ষণগুলো হলোঃ
১) চোখে তীব্র ব্যথা
২)চোখ লাল হয়ে যাওয়া
৩)ঝাপসা দৃষ্টি, চোখের মণি বা তারারন্ধ্র বড়ো হয়ে যাওয়া
৪) বমিভাব।
গ্লুকোমার কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে তা স্থায়ীভাবে কমে।
ঝুঁকিঃ
১)চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ (intraocular pressure) বেড়ে যাওয়া
২) পরিবারের অন্য সদস্যের এই রোগ থাকা
৩)উচ্চ রক্তচাপ
৪)অতিস্থুলতা ইত্যাদি।
৫)চোখের আঘাত, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, প্রদাহ ইত্যাদি গ্লুকোমার কারণ হতে পারে।
৬) ইন্ট্রাওকুলার প্রেসার ২১ মি.মি. পারদ চাপের বেশি থাকলে গ্লুকোমার আশঙ্কা বেশি। তবে চোখের চাপ স্বাভাবিক থাকলেও গ্লুকোমা হতে পারে যেমন নরমাল-টেনশন গ্লুকোমা।
গ্লুকোমা চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয় নানা ধরনের চোখের ড্রপ, কখনো লেজার এবং কখনো শল্যচিকিৎসা। শল্যচিকিৎসার নানা প্রকার রয়েছে। এর মধ্যে ফিলট্রেশন সার্জারি, এক্সপ্রেস সান্ট, গ্লুকোমা ভালভ প্রতিস্থাপন ইত্যাদি অন্যতম। তবে গ্লুকোমার আধুনিক চিকিৎসা হলো এক্সপ্রেস শান্ট ইমপ্লান্টেশন, যাতে সফলতা অনেক বেশি এবং জটিলতা অনেক কম। এক্সপ্রেস শান্ট একটি ক্ষুদ্রাকৃতির স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। মাত্র ৩ মিলিমিটার দীর্ঘ এই শান্টটি চোখের ভেতরের পানি বা একিউয়াস হিউমারকে চোখের বাইরে নিয়ে আসে এবং পরে তা রক্তে মিশে যায়। এটি ব্যবহার করলে চোখের ভেতরের আইরিশ কেটে ফেলার প্রয়োজন হয় না। যার ফলে চোখে প্রদাহ কম হয়। অস্ত্রোপচার-পরবর্তী চোখের অবস্থাও থাকে স্বচ্ছ। দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনাও বেশি।
একটু ব্যয়বহুল হলেও বিদেশের তুলনায় অনেক কম খরচে এক্সপ্রেস শান্টের সাহায্যে গ্লুকোমার শল্যচিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব।
সারাবিশ্বে প্রায় ৬৭ মিলিয়ন লোক গ্লুকোমায় আক্রান্ত। সাধারণত বয়স্ক লোকের বেশি হয়। ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা মহিলাদের বেশি হয়।সারাবিশ্বে ছানির পরে গ্লুকোমা অন্ধত্বের দ্বিতীয় কারণ।