নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে একজন নার্সকে রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে নার্স নেতারা এ দাবি জানান।
এ সময় তারা বলেন, দেশে বর্তমানে রেজিস্টার্ড নার্স ৪৮ হাজার। কিন্তু দেশে এখনো ১ লাখ নার্স বেকার। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দক্ষ নার্সকে বিদেশে পাঠানো হলে দেশ স্বাবলম্বী হবে, রেমিটেন্স আসবে, এতে দেশ এগিয়ে যাবে। একইসঙ্গে কমবে বেকারের সংখ্যা।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্যকে অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশাকে সংবর্ধনা প্রদান উপলক্ষে এদিন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগের পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন রাজশাহীর বিভিন্ন নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের নার্সরা। রাজশাহী নার্সিং কলেজ মিলনায়তনে সাংসদকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হয় এ সংবর্ধনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগের সভাপতি শাহাদাতুন নূর লাকি। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংসদ সদস্যকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন নার্স ও নার্সিং শিক্ষার্থীরা। এসময় বক্তব্য সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী নার্সিং কলেজের শিক্ষক ঝর্না খানমসহ হাসপাতালের নার্স ও নার্সিং শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্য প্রদানকালে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগের সভাপতি শাহাদাতুন নূর লাকি বলেন, ৫২ বছরেও নার্সরা নিষ্পেষিত। এ সেক্টরের উচ্চপদস্থ সব চেয়ারে আমলারা বসে আছেন। নার্সদের পদোন্নতি দিয়ে বসানো হয়নি, দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমলাদেরকে। সেক্টর পুরোটা আমলাদের দখলে। আমলাদের দখল থেকে নার্সিংকে মুক্ত করা হোক।
শাহাদাতুন নূর লাকি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ হাজার ২১১ পোস্ট। এরমধ্যে ১ হাজার মহিলা। নার্সরা সেবার জন্য নিবেদিতপ্রাণ। নিজের জীবনকে তুচ্ছতা করে সেবা দিয়ে রোগীদের সুস্থ করেন। করোনার সময় মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে সেবা দিয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য- নার্সদের জন্য যে আবাসন ভাতা ও প্রণোদনার প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল, রাজশাহীর কোনো নার্স এসব ভাতা পান নাই। প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন হয়নি।
বিএনএ রাজশাহী বিভাগের এ সভাপতি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৯০ নার্সের লিস্ট পাঠানো হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ে তাদের টাকা ছাড়ও হয়েছিল। কিন্তু তারা টাকা এখনো পাননি। নার্সদের সুরক্ষা খুবই ক্ষীণ। নার্সরা বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়; মানসিক, শারীরিক ও যৌন। কষ্ট করে সেবা প্রদান করে থাকেন। সন্তানকে বাসায় রেখে আসেন। তবু যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে নার্সদের। এ সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শাহাদাতুন নূর লাকি। সর্বশেষ নার্সিং সেক্টরকে ঢেলে সাজানো এবং জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে একজন নার্সকে সদস্য হিসেবে রাখার দাবি জানান তিনি।
সবশেষ বক্তব্য প্রদানকালে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে কাজ করার ঘোষণা দেন সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা। বলেন, কথা দিলাম আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করব। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সারথি হব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিভাগীয় সহকারী পরিচালক (নার্সিং) সুসমিতা দাস, মেডিকেলের সুপারিন্টেনডেন্ট মজিবুর রহমান, বক্ষব্যাধী হাসপাতালের ডেপু সুপারিন্টেনডেন্ট নাজমা বেগম, রামেক হাসপাতালের সরসতি বালা বিশ্বাস, রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ইলোরা পারভিন, বিএনএ’র বক্ষব্যাধী শাখার হেলেনা খানম, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট নার্সেস ইউনিয়ন, রাজশাহীর সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, এসবিজিএসএন রাজশাহীর সভাপতি হাবিবুল্লাহ, সাবেক সভাপতি মো. সিজানসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।