স্টাফ রিপোর্টার- সুরাইয়া খাতুন,নাটোর।
জরায়ু মুখের ক্যান্সার বা সার্ভিকেল ক্যান্সার বর্তমানে মহিলাদের একটি আলোচিত অসুখ৷ বিশ্বে নারীদের কমন ক্যান্সারের মধ্যে জরায়ু ক্যান্সার দ্বিতীয় এবং ক্যান্সার জনিত মৃত্যুতে এটি পঞ্চম। বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারী এই ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের কারণে ৯০% মানুষ জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এই ক্যান্সারে তেমন কোনো শারীরিক কষ্ট অনুভব হয়না। কোনো ব্যথাও থাকে না। ফলে বেশিরভাগ সময় নারীরা এই ক্যান্সারকে বুঝেই উঠতে পারেন না।
কিন্তু একদিনে বা একমাসে হঠাৎ করে এ ক্যান্সার হয় না। আক্রান্ত হওয়ার সময় থেকে শুরু করে শেষ পর্যায়ে পৌঁছাতে ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লাগতে পারে।
জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার কারণঃ
★২টি বয়সে বেশি দেখা যায়৷ ৩৫ বছরে এবং ৫০-৫৫ বছরে৷
★ অল্প বয়সে বিয়ে হলে (১৮ বছরের নিচে) বা যৌন মিলন করে থাকলে।
★ ২০ বছরের নিচে গর্ভধারণ ও মা হওয়া।
★ অধিক ও ঘনঘন সন্তান প্রসব।
★বহুগামিতা।
★স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব এবং জননাঙ্গের অপরিচ্ছন্ন অবস্থা।
সাধারণত জরায়ু ক্যান্সারে প্রাথমিক অবস্থায় কোন লক্ষণ থাকে না। তবে নিচের লক্ষণগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়৷
জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণসমুহ:-
★অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়া। ঋতু সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১ বছর পরেও রক্তস্রাব দেখা যাওয়া।
★যৌনসঙ্গমের পর রক্তস্রাব হওয়া। যোনিপথে বাদামি অথবা রক্তমিশ্রিত স্রাবের আধিক্য দেখা দেওয়া।
★অভ্যস্ত থাকার পরও যৌনমিলনের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া।
★সাদা দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব হওয়া।
★নারীদের মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পরও রক্তক্ষরণ হওয়া।
জরায়ু মুখের ক্যান্সারের প্রতিকার:-
প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার ধরা পড়লে জরায়ু কেটে বাদ দেওয়ার দরকার পড়ে না। ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতাই মুখ্য বিষয়৷ টিকা দিয়ে জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। প্রত্যেক নারীর বয়স ৩০-এর বেশি হলে ৩ বছর পর পর জরায়ু মুখের পরীক্ষা করানো উচিত। কোনো সন্দেহ বা লক্ষণ দেখা দিলে যে-কোনো বয়সের নারীর উচিত আগেভাগেই পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া।
দ্রুত রোগ ধরা পড়লে অপারেশনের মাধ্যমে জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া যেতে পারে৷ কেমোথেরাপি এবং রেডিও থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া যায়। যদি কেউ আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় তাহলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নিলে শতাভাগ মুক্তি লাভ করা সম্ভব।