শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

গভীর রাতে দরজা-জানালা বন্ধ করে যাত্রীবাহী বাসে কিশোরীকে গণধর্ষণ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৪৪৩ Time View

স্টাফ রিপর্টারঃসাদিয়া সুলতানা সকাল,ঢাকা
⌚সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০

ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী তিশা প্লাস পরিবহনের একটি বাসে এক কিশোরীকে (১৬) আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাসটির চালক আরিফ হোসেন সোহেল ও হেলপার বাবু শেখকে গ্রেফতার করেছে। তারা যথাক্রমে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার নোয়াবাড়ি (পদুয়ার বাজার) ও মধ্যম আশ্রাফপুর এলাকার বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তাদের দুজনকে আদালতে তুলে ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

এর আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্যাতিত কিশোরীকে চিকিৎসা, মেডিকেল পরীক্ষা এবং পরে আদালতে জবানবন্দির শেষে বুধবার রাতে তার মায়ের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

তবে বৃহস্পতিবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘটনার আরেক অভিযুক্ত বাস সুপারভাইজার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আটচাইল গ্রামের বাসিন্দা আলমকে (৩২) গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ, মামলার বিবরণ ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরী (১৬) কিছুদিন আগে চাকরির খোঁজে রাজধানীতে গিয়েছিল।

গত সোমবার বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে তিশা প্লাস পরিবহনের কুমিল্লাগামী একটি বাসে ওঠে সে। বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে সে শাসনগাছা বাস স্টেশনে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বললে তারা তাকে আশ্বস্ত করে।

কিন্তু তিন অভিযুক্ত অন্য সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়ার পর বাসটিকে কিশোরীর গন্তব্য শাসনগাছায় না নিয়ে জেলা সদরের অদূরে সদর দক্ষিণ থানার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের আল-শাকিল হোটেলের সামনে নিয়ে যায়।

সেখানে মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিশোরীকে গণধর্ষণ করে বাবু শেখ, আরিফ হোসেন সোহেল ও আলম (৩২)।

চালক আরিফ হোসেন সোহেল বাস থেকে নেমে চলে গেলে হেলপার বাবু শেখ ও সুপারভাইজার আলম কিশোরীকে বাস থেকে নামিয়ে বাবুর বাসায় নিয়ে আবারও ধর্ষণ করে। সেখান থেকে সকাল ৬টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় ভুক্তভোগীকে বের করে দেয় তারা।

বেলা গড়িয়ে দুপুর হলে নির্যাতিত কিশোরী মুঠোফোনে বিষয়টি তার মাকে জানায়। বেলা ২টার দিকে তার মা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় গিয়ে বিস্তারিত শুনে স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করেন।

ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ওইদিন রাতেই তিনজনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।

ভুক্তভোগীর মা জানান, তার মেয়ে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ৫ মাস আগে বাড়িতে চলে এসেছিল সে। গত শুক্রবার চাকরির খোঁজে রাজধানীতে গিয়ে চাচাতো বোনের বাসায় উঠেছিল সে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হয়।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বুধবার রাতে তাকে বাড়ি নিয়ে যান স্বজনরা।

এদিকে, তিশা প্লাস পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ওই গাড়ির মালিক দুলাল হোসেন অপু বলেন, “ঘটনার পর আমরা তিশা প্লাস পরিবহনের ওই গাড়ির (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৩৯৮) চালক ও হেলপারকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছি।”

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর বৃহস্পতিবার রাতে জানান, মামলার পর অভিযান চালিয়ে বাবু শেখ ও আরিফ হোসেন সোহেলকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে তুলে তাদের ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

এছাড়া, ভুক্তভোগী কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। সে আদালতে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার আরেক আসামি আলমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102