জাহিদ হাসান: সম্প্রতি সরকারের উচ্চ মহল অর্থাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে “কোভিড-১৯ চিকিৎসায় যারা সরাসরি জড়িত” তাদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এই “সরাসরি জড়িত” বলতে সরকার কি বোঝাতে চেয়েছে তা এখনো সুস্পষ্ট নয়। তাই বিষয়টি আলোচনার অবকাশ রাখে।
অনেকে “কোভিড-১৯ চিকিৎসায় যারা সরাসরি জড়িত” বলতে কেবল মাত্র “কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল” এ কর্মরত চিকিৎসক এবং নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের বুঝিয়েছে বলে ব্যাখ্যা করছেন। কিন্তু সেটা করলে স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরাট একটি অংশ বর্তমান কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধের ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধারা এই প্রণোদনার সুবিধা বঞ্চিত হবে। সুতরাং বিষয়গুলো আরো সূক্ষ্ম ভাবে বিবেচণা করতে হবে।
স্বাস্থ্যসেবা একটি দলগত কাজ। উপজেলা পর্যায়ে ইউএইচএফপিও-র নেতৃত্বে এবং জেলা পর্যায় সিভিল সার্জন সাহেবদের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে এমন কি কোথাও কোথাও ল্যাবরেটরী টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনা রোগীর কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করাও ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং এই সব স্বাস্থ্যকর্মীরাও প্রণোদনা প্রাপ্য। তাছাড়া কমিউনিটি স্প্রেডের কারণে উপজেলা হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালে অশনাক্তকৃত রোগী এবং লক্ষণবিহীন রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ অনেক স্বাস্থ্য কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। সুতরাং ওনারাও সবাই স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য প্রণোদনা প্রাপ্য। তাছাড়া বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ, মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী এন্ড অবস্, আইসিইউ, রেডিওলজি বিভাগে ডিউটি করতে গিয়েও অনেকেই হয়েছেন করোনা সংক্রমনের শিকার।
সুতরাং স্বাস্থ্য খাতে করোনার জন্য প্রণোদনা দেয়ার জন্য কেবল মাত্র কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালই নয় বরং সমগ্র স্বাস্থ্য খাতের সকল চিকিৎসক এবং নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ সকল স্বাস্থ্য কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।।
আর একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো করোনা প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেককে স্ব স্ব বেতন স্কেল এবং কর্ম ক্ষেত্রের ঝুঁকির উপর নির্ভর করে মাসিক বেতনের সাথে প্রণোদনা প্রদান করতে হবে।
লেখা:ডা. আজাদ হাসান (সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল)