নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০.
করোনার যম হতে পারে এই ক্ষুদ্র এন্টিবডি, নতুন আবিস্কারে আশান্বিত বিজ্ঞানীরা
আকারে সে খুবই ছোট। একটা সাধারণ অ্যান্টিবডির দৈর্ঘ্যের এক দশমাংশ মাত্র। কিন্তু এই খুদে অ্যান্টিবডির ক্ষমতাতেই আশা জাগছে বিজ্ঞানীদের মনে। দেখা গিয়েছে, কোভিড-১৯ (COVID-19) সংক্রমণ সৃষ্টিকারী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এদের।
এবি৮ নামের এই অ্যান্টিবডি ব্যবহৃত হয় ড্রাগ তৈরি করতে। এটিকে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন কয়েকজন গবেষক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কানাডার ‘ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়া’-র শ্রীরাম সুব্রহ্মণ্যম নামে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত গবেষকও।
‘সেল’ নামের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। তাতে দাবি করা হয়েছে, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে দমন করতে পারে এই অ্যান্টিবডি। হয়ে উঠতে পারে করোনার (Novel Coronavirus) ‘যম’। দেখা গিয়েছে ইঁদুর ও হ্যামস্টার নামের বড় ইঁদুর জাতীয় প্রাণীদের শরীরে সার্স-কোভ-২ সংক্রমণ রুখতে দারুণ কার্যকরী হয়েছে এবি৮।
পাশাপাশি আশার কথা, মানবকোষে এই অ্যান্টিবডির কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি। ফলে এর প্রয়োগও নিরাপদ হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
অন্যতম গবেষক আমেরিকার পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন মেলোর্স জানাচ্ছেন, ‘‘এই এবি৮ কেবল যে কোভিড-১৯-র চিকিৎসায় কার্যকরী তাই নয়। পাশাপাশি সার্স-কোভ-২-র সংক্রমণ হওয়া থেকেও বাঁচায় এটি।’’ তিনি আশাবাদী, যাঁদের কখনও করোনা সংক্রমণ হয়নি এবং যাঁরা ‘ইমিউন’ নন, তাঁদের ক্ষেত্রে অসম্ভব কার্যকরী হতে পারে এই খুদে অ্যান্টিবডি।
প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির শরীর থেকে প্লাজমা নিয়ে করোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হচ্ছে পরীক্ষামূলক ভাবে। এই প্লাজমায় করোনা যুদ্ধে জয়ীদের শরীরে থাকা অ্যান্টিবডি থাকায় তা আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও এর প্রয়োগ প্রমাণিত নয়। পাশাপাশি যত প্লাজমা প্রয়োজন হবে ততটা জোগান দেওয়াও সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে চিনের ইউহান শহরে প্রথম দেখা মেলে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের। খুব দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘অতিমারী’ বলে ঘোষণা করে। তারপর থেকেই এই সংক্রামক ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে সারা বিশ্বের গবেষকরা শুরু করেছেন লড়াই।
তিলক বালা/বিডিনার্সিং২৪