কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: এবার সরকারি হাসপাতালে মিলেছে করোনার জাল সনদ। করোনা পরীক্ষার নমুনা না নিয়েই করোনার নেগেটিভ রেজাল্ট বিক্রির অভিযোগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়েছে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ একটি দল।
বুধবার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে পাঁচ ঘণ্টার এ অভিযান। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মাহফুজুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরির জন্য করোনা নেগেটিভ রেজাল্ট দিতে হচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের কয়েকদিন ধরেই মিরপুর হাসপাতাল থেকে ভুয়া করোনা নেগেটিভ সনদ দিয়ে আসছিলেন মাহফুজুর রহমান। এর জন্য নেয়া হচ্ছিল ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গোপনে এ খবর পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়। পাঁচ ঘণ্টার অভিযান শেষে আটক করা হয় মাহফুজুর রহমানকে। তার কাছ থেকে একটি কম্পিউটারের হার্ডডিক্স, একটি পেনড্রাইভ, একটি স্ট্যাম্প সিল ও ১৩টি নেগেটিভ করোনার ভুয়া সনদের ফটোকপি জব্দ করা হয়।
অভিযান চলাকালে হাসপাতালের ছবি ও ভিডিও নিতে গণমাধ্যমকর্মীদের বাধা দেন মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জেসমিন আরা।
কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা না নিয়েই নেগেটিভ রেজাল্ট দিচ্ছে- এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মিরপুর থানার ওসি আবুল কালাম জানান, কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জনের দেয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মাহফুজুর রহমানকে আটক করেছি।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সময় কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবের তথ্যসম্বলিত ফরমেট ব্যবহার করে ভুয়া করোনার সনদ দিয়ে আসছিল মাহফুজুর রহমান। যারা প্রতারণার মাধ্যমে এভাবে করোনার সনদ দেবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন অসাধু চিকিৎসক এবং কর্মচারীর সমন্বয়ে একটি চক্র এ ধরনের কর্মকাণ্ড করোনার শুরু থেকেই করে আসছেন।