রিপোর্টার: এ.কে.সরকার
করোনা ভাইরাস যেমন মানুষের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বাড়িয়েছে, তেমনই বাড়িয়েছে সামাজিক দূরত্বও।
কিন্তু সংকটকালে মানবতা যে পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি, সেটা বুঝিয়ে দিল হরিয়ানার এক চোর।
সাম্প্রতিক ভারতের হারিয়ানার একজন চোর, চুরি করার ২৪ ঘণ্টা পেরনোর আগেই প্রায় ১৭০০ ডোজ ভ্যাকসিন ফেরত দিল সে।
আসলে সে নাকি জানতই না, ওই ব্যাগে করোনার ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) আছে।
নিজের অজান্তেই করা সেই ‘ভুল’ শুধরে নিতেই ছোট্ট চিরকুট লিখে ভ্যাকসিনের পুরো ব্যাগটিই ফেরত রেখে গিয়েছে সে।
করোনার (Corona Virus) টিকার হাহাকার চলছে প্রায় গোটা দেশজুড়ে।করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যত আছড়ে পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা আরও প্রকট হচ্ছে জায়গায় জায়গায়। এমন অবস্থায় যেটুকু টিকা, ওষুধ, অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে, তা নিয়েও আবার কালোবাজারি শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার দেখা যায় হরিয়ানার (Haryana) জিন্দ জেলার পিপি সেন্টার জেনারেল হাসপাতালের স্টোর রুমে রাখা ১ হাজার ৭১০টি টিকার ডোজ চুরি গিয়েছে।
স্টোর রুমে একটি ব্যাগে কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড দু’ রকম টিকাই ছিল।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের স্টোর রুম খুলে দেখা যায়, সেখানে একটি টিকার ভায়ালও নেই। স্টোর রুমের দরজা ভেঙে শুধু টিকাগুলিই চুরি করেছে চোর। স্টোর রুমে বাকি ওষুধ বা অন্য চিকিৎসার উপকরণ যা ছিল, সে সবে হাত দেওয়া হয়নি।
যেমন ছিল সেগুলি, ঠিক তেমনই রয়েছে। এর জেরে গোটা জেলায় টিকার সরবরাহ বন্ধ হয়। বর্তমানে এমনিতেই টিকার আকাল। এর মধ্যে চোরের এই কীর্তিতে আরও সমস্যায় পড়েন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বোধোদয় ঘটে চোরের। নিজের ভুল বুঝতে পেরে টিকার ডোজগুলি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জিন্দের সিভিল লাইন থানার সামনে এক ব্যক্তিকে টিকার ব্যাগটি দেয় সে।
ওই ব্যক্তিকে সে জানায়, ব্যাগটিতে পুলিশ কর্মীদের জন্য খাবার আছে। তাড়া থাকায় নিজে পৌঁছে দিতে পারছে না। ওই ব্যক্তিকেই অনুরোধ করে টিকার ব্যাগটি থানায় পৌঁছে দিতে। ব্যাগটি থানায় পৌঁছাতেই দেখা যায়, তার ভিতরে চিরকুটে লেখা,’দুঃখিত, আমি বুঝতে পারিনি এর ভিতরে করোনার ওষুধ আছে।
পুলিশ এখন ওই ‘সহৃদয়’ চোরের খোঁজ করছে। তাঁদের ধারণা, অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ রেমডিসিভির চুরি করতে এসেছিল ওই ব্যক্তি। কিন্তু ভুল করে টিকা নিয়ে চলে গিয়েছিল সে।