সিনিয়র রিপোর্টারঃমরিয়ম আক্তার
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো ‘ডায়াবেটিস’ বা ‘বহুমূত্র রোগ’। তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। ইনসুলিনের ঘাটতিই হল এ রোগের মূল কথা। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হরমোন ইনসুলিন, যার সহায়তায় দেহের কোষগুলো রক্ত থেকে গ্লুকোজকে নিতে সমর্থ হয় এবং একে শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে। ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিনের কাজ করার ক্ষমতা-এর যেকোনো একটি বা দুটোই যদি না হয়, তাহলে রক্তে বাড়তে থাকে গ্লুকোজ। আর একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঘটে নানা রকম জটিলতা, দেহের টিস্যু ও যন্ত্র বিকল হতে থাকে।
আর এই ডায়াবেটিস রোগীর স্বাস্থ্য উপকারে চলুন জেনে নেয়া যাক বাদামের কিছু উপকারিতা।
অনেকেই মনে করেন বাদাম ওজন বাড়ায়। যা ঠিক না।
ডায়াবেটিস’য়ে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি ও তার পরিবারকে রোগীর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে প্রচণ্ড সচেতন থাকতে হয়। যেকোনো কিছু খাওয়া আগেই ভাবা উচিত রক্তে শর্করার মাত্রার ওপর তার প্রভাব কেমন হবে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত চিনাবাদাম এড়িয়ে যান। এর পেছনে কারণ হতে পারে, চিনাবাদাম খাওয়া থেকে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, ওজন বেড়ে যায় এমন ভুল ধারণা।
এই ধারণা ভুল। তাই বলে ইচ্ছামতো খাওয়া যাবে না। পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য বাদাম বিশেষ উপকারী।
বাদামের সাধারণ পুষ্টিগুণঃ
কাজুবাদাম, কাঠবাদামের প্রায় সমপরিমাণ পুষ্টিগুণ মেলে চিনাবাদামে। আর খরচ কয়েকগুন কম। সব বাদামেই থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’, ভোজ্য আঁশ, আমিষ, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পুষ্টিকর উপাদান।
শুধু ডায়াবেটিসের রোগীর জন্যই নয়, হৃদরোগের ঝুঁকি, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং প্রদাহের ঝুঁকি কমাতেও বাদাম উপকারী।
খাদ্যাভ্যাসে বাদাম রাখার পন্থাঃ
বাদাম বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন, ‘পিনাট বাটার’ খেতে পারেন। সবচাইতে সহজ উপায় হবে প্রতিদিন একমুঠ পরিমাণ বাদাম খাওয়া। কাঁচা চিনাবাদাম খেতে পারলে ভালো, ভাজা বাদামেও উপকার মেলে।
তবে পরিমাণের দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। অতিরিক্ত বাদাম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে, বেড়ে যেতে পারে ওজনও।
***ডায়াবেটিকদের জন্য উপকারী দিকঃ
চিনাবাদামের ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই)’য়ের মান কম। এর অর্থ হল চিনাবাদাম খাওয়ার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায় না।
ডায়াবেটিসের রোগীদের এমন খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। আর ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মান থেকে জানা যায় একটি নির্দিষ্ট খাবার কত দ্রুত রক্তে শর্করার মান বাড়ায়। মান যত কম হবে, রক্তে শর্করার মাত্রা ওই খাবার ততই ধীর গতি বাড়াবে।
আমিষ ও ভোজ্য আঁশের উৎকৃষ্ট উৎস চিনাবাদাম, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। যারা পুরোপুরি সুস্থ তারা নিয়মিত পরিমাণ মতো বাদাম খেলে তা ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, সকালে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।