শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১ অপরাহ্ন

ডালডায় মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩৩১ Time View

👤স্টাফ রিপোর্টারঃমরিয়ম, চাঁদপুর

🕧০৭.০৯.২০২০

দেশে কয়েকটি ব্র্যান্ডের ডালডায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মাত্রার দশ গুণের বেশি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পাওয়া গেছে।

পিওর, পুষ্টি, সেনা এবং তীর ব্র্যান্ডের পিএইচওর (পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল) ২৪টি নমুনার ৯২ শতাংশে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পেয়েছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এনএইচএফএইচআরআই) গবেষকরা।

পিএইচও বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে অধিক পরিচিত। বাসাবাড়িতে ব্যবহার না হলেও বেকারি ও বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা খাবারে এর ব্যবহার হয় বহুলভাবে।

গবেষকরা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ হৃদরোগসহ বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

পর্তুগালের ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউটের ফুড কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরির সহায়তায় এই গবেষণা করা হয়।এই গবেষণার সহায়তা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন এবং গবেষণা উপদেষ্টা আবু আহাম্মদ শামীম।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০.৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা ডব্লিউএইচওর সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় ১০ গুণের বেশি।

ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে ভোক্তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস শিল্পমন্ত্রীর

ডব্লিউএইচওর নির্ধার্তি মাত্রা অনুযায়ী প্রতি ১০০ গ্রাম নমুনায় ২ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট থাকার কথা।

গবেষণার আওতায় ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটের খুচরা বিক্রেতাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বেকারি এবং রেস্তোরাঁয় খাবার তৈরিতে সচরাচর ব্যবহার হয়, এমন চারটি শীর্ষস্থানীয় পিএইচও ব্র্যান্ডের তালিকা তৈরি করা হয় জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি ব্যবহার করে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড বা টিএফএ মাত্রা নির্ণয় করা হয়েছে।
“পিএইচও নমুনা বিশ্লেষণ করে প্রতি ১০০ গ্রাম নমুনায় গড়ে ১১ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে। একটি পিএইচও ব্র্যান্ডের সাতটি নমুনায় ০.৬৯ গ্রাম থেকে শুরু করে ১৪.৫ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে।”

বাংলাদেশের খাবারে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট উপাদানের উপস্থিতি সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য-উপাত্ত না থাকার কারণেই এই গবেষণাটি করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই)সহযোগিতায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) সম্মিলিতভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

প্রজ্ঞা’র ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক প্রকল্পের টিমলিডার হাসান শাহরিয়ার মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণে ক্ষতিকর দিকগুলো উল্লেখ করে এর করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, “এই গবেষণা প্রমাণ করে বাংলাদেশে অনেক পণ্যেই বিপজ্জনক মাত্রায় ট্রান্সফ্যাট রয়েছে, যা অধিক হারে হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করছে।”

এটিএন বাংলার বার্তা সম্পাদক নাদিরা কিরণের সঞ্চলনায় জিএইচএআইর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস, ক্যাব এর প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর আহম্মদ একরামুল্লাহ, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণে উচ্চহারে হৃদরোগ, হৃদরোগজনিত মৃত্যু, স্মৃতিভ্রংশ এবং স্বল্প স্মৃতিহানি জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এসব কারণেই ভারত, থাইল্যান্ড, ব্রাজিলসহ অনেক দেশ খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতি করেছে।

বাংলাদেশ সরকার ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা মোট ফ্যাটের দুই শতাংশ নির্ধারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও তা কার্যকর করতে দ্রুত নীতি প্রণয়ন জরুরি, বলেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102