বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

ড.বিজনকে কোনো বেতন দিতে পারছে না গণস্বাস্থ্য

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৪৫২ Time View

 

👤স্টাফ রিপোর্টার :বিভাবরী
🕜০৬/০৯/২০২০

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ এর উদ্ভাবক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা জটিলতার কারণে গবেষণার কাজ থেকে বিরত আছেন। তাই কর্মব্যস্ত জীবনে বর্তমানে তার সাময়িক ‘অখণ্ড অবসর’ কাটছে লেখালেখি করে। একই জটিলতার কারণে তাকে বেতনও দিতে পারছে না গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে তাদের আশা, খুব অল্প সময়ে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এবং তিনি কাজেও ফিরতে পারবেন।

বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল জন্ম সূত্রেই বাংলাদেশি নাগরিক। কিন্তু দেশে দ্বৈত নাগরিকের বিধান না থাকার কারণে ২০০২ সালে সিঙ্গাপুরের সিভিল সার্ভিসে যোগদানের সময় নিয়ম অনুযায়ী তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন। ২০১৯ সালে এমপ্লয়মেন্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন তিনি। সেই ভিসার মেয়াদ ছিল চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত। এরপর তাকে পুনরায় এক বছরের ভিসা দেওয়া হলেও এবার কাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাকে বলে দেওয়া হয়েছে— বিদেশি নাগরিক হিসেবে কাজের অনুমতি না নিয়ে তিনি কাজ করতে পারবেন না। যদিও ইতোমধ্যে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার ওয়ার্ক পারমিটের জন্যে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও অনুমতি না পাওয়ায় তাকে গবেষণার কাজ থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে ড. বিজন কুমার শীল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি কোনও কাজ করতেছি না। এখন যে কাজটা করছি সেটা হচ্ছে লেখালেখি, তা করেই সময় কাটছে।’

ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসার বিষয়ে জানতে চাইলে ড. বিজন বলেন, ‘গণবিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি দেখছে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যার ভালো বলতে পারবেন— বিষয়টি কোনও পর্যায়ে আছে।’

তাহলে কি কাজ বন্ধই থাকবে জানতে চাইলে ড. বিজন বলেন, ‘আমাদের প্রোডাক্ট (করোনা অ্যান্টিবডি কিট) তো এখন এক্সটারনাল ভেলিডেশান গেছে। সেখান থেকে বের হয়ে আসুক, তারপর চিন্তা করা যাবে।’

ওয়ার্ক পারমিট না পাওয়া গেলে কী করবেন জানতে চাইলে হাসি দিয়ে ড. বিজন বলেন, ‘সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। দেখা যাক কী হয়। আপাতত লেখালেখি করছি। পরে কী ঘটে দেখা যাক।’

ড. বিজন কুমার শীলের নাগরিকত্বের বিষয়টি হঠাৎ করে সামনে আসা এবং তাকে কাজ করার অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তাদের ভাষ্য— পাঁচ মাস হয়ে গেলেও এখনও গণস্বাস্থ্যের করোনা অ্যান্টিবডি কিটের নিবন্ধন বা অনুমতি পায়নি। আসলে দেশের ‘কিছু লোক’ আছে, যারা এই দেশেকে আমদানি নির্ভর করে ফেলতে চায়। কারণ, এতে তাদের মোটা অঙ্কের কমিশন বা অর্থ লাভ হয়। এখন ড. বিজন চলে গেলে তাদের জন্য লাভ।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘একদল লোক আছে তারা তো চায় না যে, এদেশে কোনও গবেষণা এবং কোনও কিছু উদ্ভাবিত হোক। তারা চায় সবকিছু আমদানি হোক। এই জন্য তারা ড. বিজন কুমার শীলের নাগরিকত্ব বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। তারা ভাবছে তাকে (ড. বিজন কুমার) এখান থেকে যদি খেদানো যায় তাহলে একটা কিছু হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ মাস মাসেও আমাদের করোনা কিট অনুমোদন পায়নি। তারা চায়নি এই দেশে কোনও কিছু হোক। এই জন্য অনুমতি দিচ্ছে না। কারণ, বাইরে থেকে আমদানি করতে পারলেতো সবার লাভ হবে। কেউ কমিশন পাবে, আবার অন্যরা মানুষের কাছ থেকে উচ্চমূল্য আদায় করতে পারবে।’

ড. বিজন কুমার শীলের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপটমেন্ট অথরিটির (বিআইডিএ) কাছে তার দরখাস্ত করেছি। এখনও কোনও জবাব পাইনি। ’

ড. বিজন কুমার এখনও গণবিশ্ববিদ্যালযয়ে আছেন বলে জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘টাকা ছাড়াই তিনি কাজ করছেন। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে কোনও বেতনও দিতে পারবো না।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102