সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাসেও রোজা রাখা নিরাপদঃ বলছে জরিপ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩৬৯ Time View

👤 দীপিকা চৌধুরী
👤 নিজস্ব প্রতিবেদক, বিডিনার্সিং ২৪.কম
🕘 ০৬ এপ্রিল, ২০২১ (১০ই চৈত্র, ১৪২৭)

করোনাভাইরাসেও রোজা রাখা নিরাপদ বলছে জরিপ

রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। গত বছর রোজার মাস রমজানে করোনাভাইরাসের আক্রমণে মারা যায়নি কোনো ব্রিটিশ মুসলিম। যুক্তরাজ্যে পরিচালিত নতুন এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর আল জাজিরা।

গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) ‘পিয়ার রিভিউ জার্নাল অব গ্লোবাল হেলথ’-এর এক জরিপে এই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর রমজানে রোজা পালন করা মুসলমানদের মধ্যে করোনায় মৃত্যুর হার বাড়েনি। ফলে করোনা মহামারিতে রোজা রাখা নিরাপদ বলে মনে করছেন জরিপে অংশগ্রহণকারী ও গবেষকরা।

২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যে সর্বপ্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ২৩ এপ্রিল দেশটিতে প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময়ই রমজান মাস শুরু হয়। দেশজুড়ে লকডাউন জারির কারণে রমজানের স্বাভাবিক উদযাপন এবং মসজিদে নামাজ আদায় স্থগিত করে দেশটির সরকার।

জরিপে বলা হয়েছে, রমজান মাসের রোজা পালনকালে ব্রিটিশ মুসলমানরা করোনাভাইরাস সংক্রমণে মারা গেছেন- এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রমজান মাসে সারা দুনিয়ার ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার কিংবা পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন।

যুক্তরাজ্যেও প্রায় ত্রিশ লাখ ইসলাম ধর্মাবলম্বীর বসবাস করেন। তাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত। মহামারির সময়ে অন্য নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মতো বহু মুসলমান কমিউনিটি নির্বিচারে আক্রান্ত হয়েছে।

জরিপে ওঠে এসেছে, রমজান সংশ্লিষ্ট আচার-আচরণের সঙ্গে করোনায় মৃত্যুর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়েনি। প্রথম দিকে অনেকেই মত দেন যে, রমজান মাসে আক্রান্তের হার বেড়ে যেতে পারে। তবে নতুন জরিপে বলা হয়েছে, এসব দাবির কোনো প্রমাণ নেই। উল্টো সমাজের জন্য ক্ষতিকর স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বৈষম্য নিরসনে সহায়ক রমজান।

ফলে গত বছর পবিত্র রমজানের রোজা পালনকারী ব্রিটেনের মুসলিমদের করোনাভাইরাস সংক্রমণে বেশি মৃত্যু হয়েছে; এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ইংল্যান্ডের এক ডজনের বেশি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংগৃহীত করোনায় মৃত্যুর ডাটা বিশ্লেষণ করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তথ্য সংগৃহীত এলাকায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ। পিয়ার রিভিউ জার্নাল অব গ্লোবাল হেলথ-এর পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে।

গবেষণা সহকারী সালমান ওয়াকার বলেন, রমজানে করোনাভাইরাস মহামারির ক্ষতিকর প্রভাবের আলামত পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির কিছু রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকদের মন্তব্যের সঙ্গে এই গবেষণার ফল সাংঘর্ষিক বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

কারণ দেশটির অনেক বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদ গত বছর কিছু কিছু এলাকায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়- বিশেষ করে মুসলিমদের দায়ী করেছিলো।

যদিও ব্রিটেনে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতো অনেক মুসলমানও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের জরিপে দেখা গেছে- করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ওপর রমজান মাসের আনুষ্ঠানিকতা পালনের ক্ষতিকর প্রভাব ছিল না।

এদিকে ব্রিটেনের মুসলিমদের বৃহত্তম সংগঠন দ্য মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) বলছে, এই গবেষণা প্রতিবেদন রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকদের নেতিবাচক ধারণা বাতিল করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যে আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে রমজান শুরু হবে; যার দুই সপ্তাহ আগে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো।

উল্লেখ্য প্রত্যেক বছর বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাস পালন করেন। এ সময় ইসলামের বিধান অনুযায়ী- তারা ভোর রাতে সাহরি থেকে সন্ধ্যার ইফতারের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো ধরনের খাবার এবং পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। আর যুক্তরাজ্যে ৩০ লাখের বেশি মুসলিম বসবাস করেন; যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় পাঁচ শতাংশ।

এমএমএস/জেআইএম

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102