স্টাফ রিপোর্টার-নাদিয়া রহমান, ঢাকা
তারিখ -০৭.০৯.২০২
চালকহীন এই আকাশযানের গতি শব্দের তুলনায় ৬ গুণ বেশি।
সেকেন্ডে এক মাইলের বেশি গতি চলছে
এই প্রযুক্তির সাহায্যে শব্দের চেয়ে বেশি গতির ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি সম্ভব।
সুপারসনিক প্রযুক্তির যুগ পেরিয়ে ভারত ঢুকে গেল হাইপারসোনিক প্রযুক্তির যুগে। পূর্ব লাদাখে চীন যখন ভারতের সামরিক শক্তি ও ধৈর্যের পরীক্ষায় ব্যস্ত, ভারত তখনই এই প্রযুক্তি আয়ত্ত করার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করল। এই প্রযুক্তির সাহায্যে হাইপারসোনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতি) ক্রুজ মিসাইল তৈরি করা সম্ভব। সোমবার ওডিশার হুইলার দ্বীপে এ পি জে আবদুল কালাম উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে এই প্রথম সাফল্যের সঙ্গে পরীক্ষা করল হাইপারসোনিক টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেশন ভেহিকল। এই সাফল্য আগামী দিনে উন্নতমানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সহায়ক হবে।
পৃথিবীতে মাত্র তিনটি দেশ— যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন এই প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে। সেই কাতারে চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারত তার স্থান করে নিল। ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এই পরীক্ষা চালায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই পরীক্ষা প্রথমবার করা হয়। কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্য অর্জনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। সোমবার সাফল্যের সঙ্গে তা অর্জিত হওয়ার পর এই ঘোষণা করা হয়।
ডিআরডিও এই সাফল্যকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করেছে। বলেছে, আত্মনির্ভর ভারত হওয়ার পথে এই সাফল্য এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রযুক্তির সাহায্যে হাইপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল তৈরি করা সম্ভব। সেটা হলে চীনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ভারত আঘাত হানতে পারবে। সফল উৎক্ষেপণের খবর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইট মারফত দিয়ে বিজ্ঞানীদের অভিনন্দিত করেন। এই প্রযুক্তির সাহায্যে যে গতি আয়ত্ত করা সম্ভব হবে, তা শব্দের তুলনায় ছয় গুণ দ্রুতগামী।
এই প্রযুক্তির পরিভাষায় যা ‘ম্যাক ৫’। অর্থাৎ, ছয় গুণ বেশি গতিতে ঘণ্টায় ৩ হাজার ৮৩৬ দশমিক ৩৫ মাইল পথ এই যান অতিক্রম করতে পারে। গতির তারতম্য ঘটে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যানের উচ্চতা ও উষ্ণতা অনুযায়ী। ডিআরডিও জানায়, ভারত যে প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে তার গতি শব্দের তুলনায় ৬ গুণ বেশি। তারা জানায়, চালকহীন এই আকাশযান উৎক্ষেপণের পর ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রতি সেকেন্ডে ২ কিলোমিটার গতিতে ২০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে চলেছে। উল্লেখ্য, শব্দের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার। পূর্ব লাদাখে চীনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাদের রেষারেষির সময় এই সাফল্যের খবর প্রচার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এই সাফল্যের ঘোষণা সামরিক মনোবল বৃদ্ধির সহায়ক ও মনস্তাত্ত্বিক কৌশলের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।