👤স্টাফ রিপোর্টার-তোফায়েল আহমেদ নোমান,ঢাকা🕛৩০.০৮.২০২০
মার্কিন ও ব্রিটিশ কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করেছে বিখ্যাত ফরাসি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সানোফি। আগামী মাস থেকেই তাদের টিকার দুই পর্বের ট্রায়াল শুরু করবে কোম্পানিটি। চলতি বছরের শেষেই টিকার প্রায় ৩০ কোটি ডোজ বিশ্বের বাজারে নিয়ে আসার দাবিও করা হয়েছে। কোম্পানিটির ভাইরোলজিস্টের দাবি, এই টিকায় রয়েছে এমন উপাদান, যা শরীরে অনেক বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।
মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজারের মতোই মেসেঞ্জার আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়ে টিকা তৈরি করেছে সানোফি। তবে প্যারিসের ভাইরোলজিস্টের দাবি, এই টিকায় রয়েছে এমন উপাদান, যা শরীরে অনেক বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। দাবি, অন্যান্য টিকার থেকেও ৭০ শতাংশ বেশি কার্যকর হবে এই ভ্যাকসিন।
সানোফির সিইও পল হাডসন জানিয়েছেন, ব্রিটেনের গ্ল্যাক্সো-স্মিথ কাইন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্রান্সলেট বায়োটেকনোলজির সহযোগিতায় বার্তাবাহক আরএনএ সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়ে এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করা হয়েছে। এতে রয়েছে বিশেষ এক ধরনের ‘অ্যাডজুভেন্ট’, যা ইমিউন বুস্টার হিসেবে কাজ করবে।
অ্যাডজুভেন্টকে বলা হয় ইমিউনিলোজিক্যাল এজেন্ট। এটা এমন উপাদান যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে পারে। ভ্যাকসিন তৈরির সময় নিষ্ক্রিয় ভাইরাল স্ট্রেনের সঙ্গে এই উপাদান মিশিয়ে দিলে রক্তে অ্যান্টিবডি বেশি তৈরি হয় বলেই দাবি গবেষকদের। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বেশি সময়ের জন্য তৈরি হয়।
সানোফির ভাইরোলজসিস্টরা বলছেন, এই উপাদান বি-কোষকে সক্রিয় করে অ্যান্টিবডি তৈরি করবে, আবার টি-কোষকেও অ্যাকটিভ করে তুলবে। ভাইরাস বা সংক্রামক প্যাথোজেনের থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
সানোফি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে বিশ্বের প্রথম পাঁচ ড্রাগ ও ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার মধ্যে নাম চলে আসে সানোফির।
সিইও পল হাডসন বলেছেন, টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল দেখে এ বছরের মধ্যেই প্রথম দফায় ৩০ কোটি ডোজ নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। ইউরোপীয় দেশগুলোর ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৩০টি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। তার মধ্যে নজরে রয়েছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকা, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও চীনের ক্যানসিনো বায়োটেক ও সিনোফার্মার টিকা। রাশিয়া ইতোমধ্যে প্রথম করোনার টিকা নিয়ে আসার দাবি করেছে। স্পুটনিক ভি টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে দেশে। তবে বিশ্বের ২০টি দেশে এই টিকা তৈরি ও বিতরণের জন্য আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে রুশ সরকার। ফাইজার ও মডার্নার টিকা তৃতীয় স্তরের ট্রায়ালে রয়েছে। এই দুই সংস্থার টিকাই সাফল্যের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে। কারণ, দুই ফার্মা কোম্পানির টিকার প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলই ইতিবাচক। অন্যদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকাও ৯০ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির দাবি করেছে। এই টিকাতে টি-কোষ সক্রিয় হয়েছে বলেও দাবি। অক্সফোর্ডের টিকাও তৃতীয় স্তরের ট্রায়ালে রয়েছে।
সূত্রঃএনএমএস।