📝স্টাফ রিপোর্টার : আদনান ফারাবী সুমন।
🗒২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০।
কালো জিরাকে বলা হয় ‘মৃত্যু ছাড়া সর্ব রোগের মহৌষধ’। প্রাচীনকাল থেকেই নানা অসুখ-বিসুখে কালো জিরাকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন চিকিত্সক-কবিরাজরা। জেনে নিন কালো জিরার কিছু গুণাগুণ—
বাতের ব্যথায় :কালো জিরার তেল হালকা গরম করে নিয়ে ব্যথার জায়গায় মালিশ করলে ব্যথা সেরে যায়। বিশেষ করে বাতের ব্যথায় বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।
ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে :কালো জিরায় লিনোলেইক ও লিনোলেনিক নামের এসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড থাকে, যা পরিবেশের প্রখরতা, স্ট্রেস ইত্যাদি থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করে এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে।
স্মরণ শক্তি বাড়ায় :কালো জিরা মেধা বিকাশেও কাজ করে। কালো জিরা মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
জৈব শক্তি বাড়ায় :কালো জিরা নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে কালো জিরা খেলে পুরুষের স্পার্ম বৃদ্ধি পায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করে।
বুকের দুধ বাড়ায় :যেসব মায়ের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই, তাদের জন্য কালো জিরা মহৌষধ। এক্ষেত্রে মায়েরা প্রতি রাতে শোয়ার আগে ৫-১০ গ্রাম কালো জিরা মিহি করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাবেন। এছাড়া এক চা চামচ কালো জিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ প্রতিদিন ৩ বার করে নিয়মিত সেবন করতে হবে।
অনিয়মিত মাসিকে :অনিয়মিত মাসিক স্রাব বা মেহ-প্রমেহ রোগের ক্ষেত্রে এক কাপ কাঁচা হলুদের রস বা সমপরিমাণ আতপ চাল ধোয়া পানির সঙ্গে এক চা চামচ কালো জিরার তেল মিশিয়ে দৈনিক ৩ বার করে নিয়মিত কিছুদিন সেবন করতে হবে।
চুলপড়া রোধে :কালো জিরা চুলপড়া রোধ করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ১ চা চামচ কালো জিরার তেল ও ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে হালকা গরম করে নিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট মেসেজ করতে হবে। তার ১ ঘণ্টা পর চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিতে হবে।
হাঁপানী সারাতে :হাঁপানী বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগলে খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন কালো জিরার ভর্তা রাখুন। এছাড়া এক চা চামচ কালো জিরার তেল, এক কাপ দুধ বা রং চায়ের সঙ্গে প্রতিদিন ৩ বার সেবন করতে হবে।
এছাড়াও কালো জিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত কালো জিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। দাঁতের ব্যথায় পানিতে কালো জিরা দিয়ে ফুটিয়ে পানির তাপমাত্রা উষ্ণ অবস্থায় এলে তা দিয়ে কুলি করলে দাঁত ব্যথা কমবে এবং মাঢ়ির ফোলা বা রক্ত পড়া বন্ধ হবে। এছাড়া জিহ্বা, তালু ও মুখের জীবাণু ধ্বংস হবে। ঠান্ডাজনিত মাথাব্যথা দূর করতে সুতি কাপড়ের টুকরায় কয়েকটি কালো জিরা নিয়ে পুঁটুলি তৈরি করে সেটি নাকের কাছে নিয়ে শ্বাস টানতে থাকলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা সেরে যাবে। চোখে ব্যথা হলে ঘুমানোর আগে চোখের উভয় পাশে ও ভুরুতে কালো জিরা তেল মালিশ করুন। জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশিতে প্রতিদিন এক চা চামচ কালো জিরার সঙ্গে তিন চা চামচ মধু ও দুই চা চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে সেবন করতে হবে। চায়ের সঙ্গে কালো জিরার তেল মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে বাড়তি মেদ ঝরতে সাহায্য করে। তিলের তেলের সঙ্গে কালো জিরা বাটা বা কালো জিরার তেল মিশিয়ে ফোঁড়াতে লাগালে ব্যথা উপশম হয় ও কয়েকদিনের মধ্যেই ফোঁড়া সেরে যায়। ডায়াবেটিক রোগে এক চিমটি পরিমাণ কালো জিরা এক গ্লাস পানির সঙ্গে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গরম খাদ্য বা ভাত খাওয়ার সময় কালো জিরা ভর্তা খেতে হবে।