স্টাফ রিপোর্টার-নাদিয়া রহমান
তারিখ -০৫.০৯.২০২০
লেবুর রসে প্রায় ৫% থেকে ৬% সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে। লেবুর রসের পিএইচ প্রায় ২.২ , যার কারণে এটির স্বাদ টক হয়। লেবুর রসের টক স্বাদ এটিকে পানীয় এবং খাবার, যেমন লেবু্র জল এবং লিমন মেরিংয়ে পাইয়ের মূল উপাদান হিসাবে তৈরি করে।লেবুর রস রন্ধনসম্পর্কীয় ও অ-রন্ধনসম্পর্কীয় উভয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
লেবু থেকে চল্লিশ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি বা এসকরবিক এসিড পাওয়া যা একজন মানুষের দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। ভিটামিন ‘সি’ দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে বা ক্ষত হলে দ্রুতগতিতে কোলাজেন কোষ উপাদান তৈরি করে ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে এই ভিটামিন ‘সি’। লেবুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাইট্রিক এসিড বিদ্যমান যা ক্যালসিয়াম নির্গমন হ্রাস করে পাথুরী রোগ প্রতিহত করতে পারে। লেবুর খোসার ভেতরের অংশে ‘রুটিন’ নামের বিশেষ ফ্ল্যাভানয়েড উপাদান আছে যা শিরা এবং রক্তজালিকার প্রাচীরকে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং সুরক্ষা দেয়। ফলে স্বভাবতই হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
উপকারিতা
১. লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা এন্টিসেপটিক ও ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধ করে।
২. সামান্য গরম পানিতে একটু লেবুর রস, কি যে উপকারি!!! পরিপাক প্রক্রিয়াকে কার্যকর করে আর লিভারকে রাখে সতেজ। গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় কার্যকর।
৩. লেবুর খোসা শুকিয়ে গুড়ো করে রাখতে পারেন। আর ব্যবহার করতে পারেন গোসল করার সময়। শরীরকে করবে ঠাণ্ডা , আর আরাম অনুভব করবেন ব্যাপক। এছাড়া এ গুড়ো মাথাব্যথা দূর করবে।
৪. ব্রণে লেবুর রস দিলে ব্রণ দূরীভূত হবে আর নতুন ব্রণ উঠতে বাধা প্রধান করবে।
৫. লেবু হচ্ছে প্রাকৃতিক ত্বক পরিষ্কারকারি । এটি ত্বক কালো হওয়ার জন্যে দায়ী মেলানিন কমায় এবং মেলানিন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই আপনার ত্বক থাকবে সজীব আর উজ্জ্বল।
৬. লেবুর ভিটামিন সি ক্যান্সারের সেল গঠন প্রতিরোধ করে।
৭. লেবু বুক জ্বালা প্রতিরোধ করতে ও আলসার সারাতে সাহায্য করে।
৮. লেবু শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করে।
৯. লেবু ওজন কমাতে সাহায্য করে।
১০. লেবু হজমে সহায়ক ও হজমের সমস্যা দূর করে।
১১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
১২. শরীরের ভেতরের টক্সিন দূর করে, অন্ত্রনালী, লিভার ও পুরো শরীরকে পরিষ্কার রাখে।
১৩. পেট ফোলাজনিত সমস্যা কমায়।
১৪. রক্ত পরিশোধন করে।
১৫. ঠাণ্ডা লাগলে জ্বর, গলাব্যথায় ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
১৬. শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি হলে ভালো কাজ করে।
১৭. শ্বাসনালীর ও গলার ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করে।
১৮. লেবু স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
১৯. এটি রক্তচাপ ( ব্লাড পেসার) কমায় আর রক্তে এইচ ডি এল ( ভালো কলেস্তরল) বাড়ায়।
২০. লেবু কোলন, প্রোস্টেট এবং ব্রেস্ত ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যাপক ভুমিকা পালন করে। কোষের উল্টাপাল্টা পরিপাকে বাধা দেয়, যেটি মূলত ক্যান্সার এর জন্যে দায়ী। এটি কোষের নাইট্রোসো এমিন প্রস্তুতিতে বাধা দেয়।
২১. সংক্রমনের বিরুদ্ধে লেবু কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এটি রক্তের শ্বেতকনিকা বৃদ্ধি করে যা জীবাণু ধ্বংস করে। এছাড়া এন্টিবডি উৎপাদনে সহায়তা করে।
২২. লেবু আর্থাইটিসের রোগীদের জন্য ভালো ।
২৩. গলার খুশখুশ নির্মল করতে ১/৮ গ্লাস হাল্কা গরম পানিতে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে গরগরা করলে গলার ভেতরের ব্যাকটেরিয়া মরে যাবে। অথবা গরম চা-তে ১ টেবিল চামচ করে মধু আর লেবুর রস মিশিয়ে খেলে কাজে দিবে।
২৪. দাঁত সাদা করে তুলতে ১ চামচ লেবুর রসের সাথে ১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে এই মিশ্রণ দিয়ে দাঁত মেজে ৫-১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
২৫.দিনের শুরুতে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। পাশাপাশি পাকস্থলি পরিষ্কার আর বর্জ্য নিষ্কাশনে সহায়তা করে।
২৬.পানি এবং লেবুর রস শরীরে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং রক্তে অক্সিজেন যুক্ত করে। ফলে শরীরে শক্তি সঞ্চার হয়।
২৭.দীর্ঘক্ষণ পানিশূণ্য থাকলে ত্বক ম্লান দেখায়। সকালে লেবুর শরবত খেলে এর ভিটামিন সি ত্বক সুস্থ রাখে। আর লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।