সিনিয়র রিপোর্টারঃ মরিয়ম আক্তার।
মাম্প্স বা পনসিকা (ইংরেজি: Mumps প্যারটাইটিস নামেও পরিচিত), একপ্রকারের ভাইরাসজনিত রোগ, যা মাম্পস ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। প্রতিষেধক আবিষ্কারের আগে, পৃথিবীব্যাপী শিশুদের মধ্যে এটি একটি সাধারণ রোগ ছিল। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এখনও এই রোগ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে থাকে, এছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায়ই রোগটি দেখা যায়।
শিশুদের একটি কষ্টকর ভাইরাসজনিত রোগের নাম ‘মাম্পস’।বড়দের থেকে ছোটরা এর ঝুকিতে রয়েছে বেশী। উভয় কানের নিচে, চোয়ালের পেছনে দুটি নালিহীন গ্রন্থির নাম প্যারোটিড গ্রন্থি। ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত এই প্যারোটিড গ্রন্থির প্রদাহকে বলা হয় ‘মাম্পস’। গ্রামে-গঞ্জে শিশুর এই রোগকে বলা হয় গাল ফোলা রোগ।
**উপসর্গঃ
প্রথমে জ্বর, মাথাব্যথা, গলার ব্যথা এবং কানের নিচে ব্যথা নিয়ে রোগটির শুরু। পরে একদিকের প্যারোটিড গ্রন্থি ফুলে ওঠে ও ব্যথা হয়। পরে অপর গ্রন্থি ও বেদনাযুক্ত হয়ে ফুলে ওঠে। গ্রন্থির নিঃসরণ মুখের যেখানে এসে লালার সঙ্গে মেলে, সে স্থানও লাল হয়ে ফুলে যায়। পুঁজ হয় না।
এ সময় রোগীকে বেশি দুর্বল মনে হয়, রোগী অস্বস্তি অনুভব করে, ভালো করে মুখ খুলতে পারে না। মুখে দুর্গন্ধ হয়, চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। ঢোক গিলতে ও খেতে ভীষণ কষ্ট হয়। এমনকি ঘাড়, কান, গলাও আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ১০২ থেকে ১০৩ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর কয়েক দিন থাকে।
**মাম্পস হলে কী করবেন?
এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তাই উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। জ্বর ও ব্যথার জন্য ওষুধ দিতে হবে এবং ইনফেকশন হলে সে জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া প্রয়োজন।
জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বয়স মুখে অথবা এপএ সাপোজিটরি বয়স অনুসারে দেওয়া যেতে পারে। পাঁচ বছরের নিচের শিশুকে ১২৫ মিলিগ্রাম এবং পাঁচ বছরের বড় হলে ২৫০ মিলিগ্রাম মাত্রার দেওয়া যেতে পারে। সাপোজিটরি খুব বেশি জ্বর ও ব্যথা না হলে দিতে নিই।
রোগীকে আলাদা ঘরে কমপক্ষে দুই থেকে তিন সপ্তাহ রাখা উচিত।
রোগীর ব্যবহৃত কাপড়, জিনিসপত্র গরম পানিতে সেদ্ধ করে ধোয়া প্রয়োজন।
রোগীকে প্রচুর তরল খাবার দিতে হবে।
** এইসময় কী করবেন নাঃ
আক্রান্ত অবস্থায় রোগীর প্রচণ্ড জ্বর ও ঘাড় শক্ত হয়ে গেলে, নারীদের ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথা করলে ও পুরুষদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষে ব্যথা অনুভব করলে, আর ঘরে বসে থাকবেন না। কারণ, এগুলো মাম্পস এর জটিলতা নির্দেশ করে। এসব জটিলতার ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ রোগে ছোঁয়াচে বলে এ সময় শিশুকে খুব কাছ থেকে আদর করা বা চুমু দেওয়া ঠিক নয়। এতে রোগ ছড়াবে।
রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ভুলবেন না।
কোনোরকম ঝাড়ফুঁক করাবেন না।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবন।