👩🏻স্টাফ রিপোর্টারঃ আম্বিয়ারা শারমিন, বগুড়া
✍🏻১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
আপনার সন্তান বা অন্য পরিবারের কেউ মাদকাসক্ত হয়ে সামান্য ব্যাপারেই রাগ করা, বিরক্ত হওয়া,মিথ্যা কথা বলা,একা একা থাকা, অধিক রাত জেগে থাকা,কথা দিয়ে কথা না রাখা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, বিচার-বিবেচনা বিচক্ষণতা ক্ষমতা কমে যাওয়া, মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করা বা না বলে তা বিক্রি করে দেওয়া, প্রতিদিন নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাড়ির বাহিরে থাকা, অপরিচি বন্ধু-বান্ধবের আনাগোনা বেড়ে যাওয়া, আসক্ত বন্ধুদের বা অসম লিঙ্গ ও বয়সীদের সঙ্গে মেলামেশা করা, পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়া, স্কুল/ কলেজ পালানোর অভ্যাস হওয়া, নিজেকে আড়ালে রাখা বা হঠাৎ অতিরিক্ত আধুনিকভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা,স্বাস্থ্য ও চেহারা নষ্ট হয়ে যাওয়া,প্রতিদিনই বিভিন্ন বায়নায় হাত খরচ বেড়ে যাওয়া, ক্ষুধা নষ্ট হয়ে যাওয়া বা একটা বিশেষ খাবার (মাংস, চানাচুর, কোল ড্রিংক) অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া। ধর্মীয় আচার আচরণ, অদ্ভুত যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করা বা ঠাট্টা তামাশা করা,বউকে মারধর করা, অপকর্মে লিপ্ত হওয়া আজ যেন বাংলাদেশের প্রায় ঘরে ঘরে একই দৃশ্য।
বাংলাদেশের মাদক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মাদকাসক্তদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ পুরুষ, ১৬ শতাংশ নারী। বাংলাদেশের মাদকসেবীদের প্রায় ৯০ভাগ কিশোর-কিশোরী । তাদের শতকরা ৪৫ ভাগ বেকার ও ৬৫ ভাগ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট। আর উচ্চশিক্ষিতের সংখ্যা ১৫ শতাংশ। কয়েকটি সংস্থার তথ্যানুযায়ী, অবৈধ মাদকদ্রব্য আমদানির জন্য প্রতিবছর ১০ হাজার কোটিরও বেশি টাকার মুদ্রা বিদেশে পাচার হচ্ছে।
জীবনীশক্তি ধ্বংসকারী মাদক সেবনে, সেবনকারীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে এবং যৌনশক্তি হারিয়ে ফেলছে চিরতরে। কিডনিসংক্রান্ত নানা জটিলতায়ও ভুগছে তারা।
তাই মাদকসেবন থেকে যুবসমাজ কে রক্ষা করতে হবে। সরকার এর একার পক্ষে এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এজন্য আপনি, আমি এবং আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
একজন মাদকাসক্ত সুস্থ থাকার জন্য তার ভিতরে ধর্মীয় মুল্যবোধ তৈরী করা জরুরী। একজন মাদকসেবীকে শুধু মাদকমুক্ত নয়, বরং একজন আদর্শ সন্তান এবং মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার সব ধরনের সহযোগীতা করতে হবে।
যে কোন মাদকাসক্তি সাধারণত ধুমপান দিয়ে শুরু হয়, তাই মা-বাবা কেউ ধুমপায়ী হলে অবশ্যই নিজে আগে ধুমপান ত্যাগ করবেন আর তা না পারলে অবশ্যই নিজ বাসাবাড়িতে সন্তানের সামনে ধুমপান করবেন না।
পরিবারের কেউ মাদকাসক্ত লুকানো বা লজ্জার বিষয় নয়, হত্যা, আত্মহত্যা, গুপ্তহত্যা, ইত্যাদি যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। চিকিৎসায় মাদকাসক্তি সম্পূর্ণ নিরাময় হয়।