বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন

নার্সিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০
  • ১১০১ Time View

নার্সিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে

সেবামূলক পেশা হচ্ছে নার্সিং। যেখানে কাজ করে একদিকে যেমন মানুষের সেবা করা যায়, তেমনি এই পেশাতে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়াও যায় খুব সহজে। দেশে এখন প্রায় সব জেলা-উপজেলা শহরেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। ক্রমেই বেড়ে চলছে এসব হাসপাতালের সংখ্যা।

তাই এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছরই নার্সের প্রয়োজন হয়। চাইলে এ পেশায় আসতে পারেন আপনিও। এ পেশায় আসতে হলে এর ওপর বিএসসি ইন নার্সিং, ডিপ্লোমা–ইন–নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সটি করতে হবে। যাঁরা এ পেশায় আসতে চান, তাঁদের জন্য সুযোগ করে দিয়েছে নার্সিং ও মিডওয়াইফ অধিদপ্তর।

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ২০২০/২০২১ শিক্ষাবর্ষে ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন নার্সিং, তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা–ইন–নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে শীঘ্রই। বিএসসি ইন নার্সিং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকে এবং কোর্স কারিকুলাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে পরিচালিত হয়। হয়তো করোনা মহামারীর জন্য এবছর একটু দেরিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।

দেশের মোট ২০ টি সরকারি নার্সিং কলেজে ১৬৩৫ টি আসনে বিএসসি ইন নার্সিং ও ৪৬ টি সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে ২ হাজার ৭৩০ টি আসনে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও ৪১ টি সরকারি ইনস্টিটিউট ১০৫০ টি আসনে ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে  ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানো হবে। তাই এ কোর্সটি করে আপনিও এই সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন।

এছাড়াও দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি নার্সিং কলেজ ও ইন্সটিটিউট থেকে নার্সিং কোর্স সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে। দেশে বর্তমানে ৬৬ টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ ও ২৩৮ টি বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট রয়েছে। এজন্য প্রর্থীকে অবশ্যই সরকারি ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বর পেতে হবে।

আবেদনের যোগ্যতাঃ

এই কোর্সে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে যেকোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে বিএসসির জন্য উভয় পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভগের হতে হবে এবং ২০১৮,২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩ এবং ২০১৯,২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। উভয় পরীক্ষা মিলে প্রার্থীকে ৭ পয়েন্ট পেতে হবে।

এবং ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারির জন্য ২০১৮,২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫ এবং ২০১৯,২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। উভয় পরীক্ষা মিলে প্রার্থীকে ৬ পয়েন্ট পেতে হবে। প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ও অবিবাহিত হতে হবে। পাশাপাশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুধু এমসিকিউ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। এ পরীক্ষায় বিএসসির জন্য ১০০ নম্বরের বাংলা, ইংরেজি, গনিত, পদার্থ, রসায়ন,জীববিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারির জন্য ১০০ নম্বরের বাংলা, গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে।

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বিডিনার্সিং২৪ কে বলেন, ‘এখন নার্সদের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। নার্সিং পেশাকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করায় পিএসসির মাধ্যমেও নিয়োগ করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে আমাদের নার্সরা কাজ করছে। ফলে এখন আর কাউকে বসে থাকতে হচ্ছে না।’

পেশা হিসেবে নার্সিংঃ

বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত আছেন মেহেদী হাসান। তিনি বিডিনার্সিং২৪ কে বলেন, ‘নার্সিং পেশাটি একটি দায়িত্বের পেশা। এ পেশায় আসতে হলে মানুষের সেবার মানসিকতা থাকতে হবে। এখানে মানুষের সেবা করা যায় খুব কাছ থেকে। বর্তমানে আমাদের দেশে তো বটেই, বিদেশেও নার্সিং পেশার দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকদের চাহিদা রয়েছে। তাই এ পেশায় বর্তমানে যেমন রয়েছে সম্মান, তেমনি রয়েছে অপার সম্ভাবনা।’

ঢাকা নার্সিং কলেজের একজন শিক্ষর্থী বিডিনার্সিং২৪ কে বলেন, সরকারিভাবে নার্সিং পড়তে হলে প্রচুর পড়াশোনা করে ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। এজন্য তিনি বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকায় গার্ডিয়ান নার্সিং ভর্তি কোচিংয়ে নিয়োমিত ক্লাস করেছেন। কোচিংয়ের লেকচার শীট ও বিষয়ভিত্তিক ক্লাসের গুরুত্ব অনেক বলে জানান তিনি। এছাড়াও নতুনদের উদ্দেশ্যে গার্ডিয়ান নার্সিং ভর্তি গাইড গুরুত্ব সহকারে পড়ারও আহবান জানান তিনি।  উভয়ের প্রচেষ্টায় তিনি সফল হয়েছেন বলেও বিডিনার্সিং২৪ কে জানান।

একজন নার্সকে সাধারণত হাসপাতাল বা ক্লিনিকের আউটডোর ও ইনডোর, অপারেশন থিয়েটারে কাজ করতে হয়। এ ছাড়া রোগীকে ওষুধ খেতে সহায়তা করাসহ নানাভাবে সেবা করারও কাজ করতে হয়। অন্যান্য চাকরির মতো এখানেও ভালো বেতন ও অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি পদোন্নতির ব্যবস্থা আছে বলে জানান এ পেশায় নিয়োজিত থাকা সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও আগামীতে বিসিএস (সেবা) চালু করারও পরিকল্পনা আছে সরকারের।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102