👤স্টাফ রিপোর্টারঃ তোফায়েল আহমেদ ⏰ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০,
স্বাস্থ অধিপতরের মহা পরিচালক বলেন একাধিক বিকল্প থেকে টিকা আনতে তৎপর সরকার। দ্রুত ভ্যাকসিন পেতে ডিপ্লোমেটিক প্রকিউরমেন্টে যেতে হবে।
দেশে করোনা রোধে চলতি মাসেই চীনের সিনোভ্যাক টিকার ট্রায়াল শুরু হবে। ৭টি হাসপাতালে ট্রায়াল চলবে। এসব হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়রা ট্রায়ালে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। আগ্রহীদের নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।
৪২০০ জনকে টিকা দেয়া হবে। এরপর তাদের ৬ মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এ সময় তারা নিজ বাসাবাড়িতে থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।
নির্দিষ্ট ৭ হাসপাতাল হচ্ছে- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২, একই হাসপাতালের বার্ন ইউনিট, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল ও হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল।
গত মাসে এই টিকা ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তবে দেশের মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে আরও একাধিক বিকল্প থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এদিকে বাংলাদেশে টিকা সহজলভ্য করতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ইউনিসেফ।
এ প্রসঙ্গে আইসিডিডিআর,বি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. কেএম জামান বলেন, প্রথমে আমরা ২১০০ জনের শরীরে নমুনা টিকা প্রয়োগ করব। আর ২১০০ জনকে দেব প্লাসিবো (প্রতীকী ওষুধ)।
পরবর্তী ৬ মাস প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহ ও প্রতি মাসে নিবিড়ভাবে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। যাদের মধ্যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে তাদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করা হবে।
প্রয়োগের আগে প্রত্যেকের শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যারা এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন কাউকে এই নমুনা টিকা প্রয়োগ করা হবে না।
সিনোভ্যাকের নমুনা টিকা সম্পর্কে ড. জামান বলেন, এই টিকা যাদের শরীরে প্রয়োগ করা হবে, তাদের মাধ্যমে অন্য কেউ সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ এই টিকা মৃত ভাইরাস বহন করছে।
যা অন্যকে সংক্রমিত করতে পারবে না। যার শরীরে প্রয়োগ করা হবে, তিনিও সংক্রমিত হবেন না। বরং টিকাটি যাদের শরীরে কার্যকর হবে, তাদের মধ্যে পর্যাপ্ত মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি করবে, যা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
প্রয়োগের পর টানা ছয় মাস সবাই পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তারা নিজেদের বাসাবাড়িতে স্বাভাবিকভাবেই থাকতে পারবেন, কর্মস্থল কিংবা বাইরে সর্বত্রই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।
আর এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যালোচনার জন্য অনেকগুলো দলের সদস্যরা একযোগে কাজ করবেন।
এক্ষেত্রে শুধু আইসিডিডিআর,বি’র গবেষকরাই নন, সরকার নির্ধারিত গবেষক দল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আরও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষক দল পর্যবেক্ষণ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২৮ আগস্ট রাতে ‘কোভিড-১৯ জনস্বাস্থ্যবিষয়ক জাতীয় কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্য সেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় টিকার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে অধ্যাপক খুরশীদ বলেন, ইতোমধ্যে চীনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
টিকার বিষয়ে ইপিআই-এর সঙ্গে একটি মাইক্রো ও ম্যাক্রো প্লান করা হয়েছে। যেখানে কীভাবে ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে আগে ভ্যাকসিন কীভাবে আসবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ভারত অক্সফোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভ্যাকসিনের ফর্মুলা কিনে নেব। তারপর তারা সেটা নিজেরা তৈরি করে রফতানি করবে। বাংলাদেশও চাইলে এটা করতে পারে।