👩সিনিয়র রিপোর্টার: রাবিয়া আক্তার মীম।
পাবনা সদর।
করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি জেলায় টিকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
শুরুতে টিকা দেওয়া হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের। তারপর সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং প্রাধিকারের তালিকা অনুযায়ী টিকাদান শুরু হবে। যারা টিকা দেবেন এবং স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে থাকবেন, অনেক জেলায় রোববার থেকে তাদের প্রশিক্ষণও শুরু হবে।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে গত বুধবার বহু প্রতীক্ষিত টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয় বাংলাদেশে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং প্রথম পাঁচজনকে টিকা দেওয়া দেখেন। প্রথম দিন সব মিলিয়ে মোট ২৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়। পরদিন ঢাকার পাঁচ হাসপাতালে টিকা দেওয়া হয় ৫৪১ জনকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, শুক্রবার পর্যন্ত দেশের ৩৬টি জেলায় করোনাভাইরাসের টিকা পৌঁছে গেছে।
শনিবার গুলশানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একযোগে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। ওইদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও টিকা নেবেন। সারাদেশে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম একই সময়ে উদ্বোধন হবে।”
খুরশীদ আলম জানান, সেদিন ঢাকার একটি হাসপাতালে টিকাদান শুরুর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
“সেদিন ফ্রন্টলাইনারদের সঙ্গে দেশের গণমান্য ব্যক্তিরাও টিকা নেবেন। ওইদিন আমার অধিদপ্তরের দেড়শ জনকে টিকা দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি, ডিজি অফিসের সবাই ওইদিন সেখানে টিকা নেব।”
এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, “ঢাকায় আপাতত কম-বেশি ৪৩টি জায়গায় করোনাভাইরাসের টিকা আমরা দিব। আর আমাদের এখানে টিম কাজ করবে ৩৫৪টা। এটা কমবেশি হতে পারে। আপাতত এই হচ্ছে আমাদের প্ল্যান।”
মহাপরিচালক জানান, সব মিলিয়ে সারাদেশে ৬ হাজার ৬৯০টি টিম কাজ করবে। কিন্তু এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে না। ইউনিয়ন পর্যায়ে কেন্দ্র হবে ৪ হাজার ৬০০টি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “মানুষকে অভয় দিন, গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করুন, লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করুন, তারা যেন টিকা নিতে আসে, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দেওয়া হবে না। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দিতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে, এ কারণে কষ্ট করে হলেও যেন রেজিস্ট্রেশন করে।
“প্রতিটি কেন্দ্রে আমাদের লোকজন থাকবে। কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন করতে ফেইল করে, তাহলে আমাদের লোকজন তাকে সাহায্য করবে।”
শনিবার পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ১১ হাজার মানুষ সুরক্ষা ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। ইতোমধ্যে সরকারের কেনা ৫০ লাখ ডোজ এবং উপহার হিসেবে ভারতের পাঠানো ২০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। আগামী পাঁচ মাসে আরও আড়াই কোটি ডোজ দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
ঢাকা থেকে জেলায় জেলায় টিকা পৌঁছে দিচ্ছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, সেরাম ইন্সটিটিউটের ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে তারাই টিকা দেশে নিয়ে এসেছে।
জেলা পর্যায়ে টিকা নির্ধারিত তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির) স্টোরে। সেখান থেকে তা সরকারের ব্যবস্থাপনায় উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। খুব তাড়াতাড়ি দেশের সব জেলাতেই টিকা পৌঁছে দেওয়া হবে।