👩সিনিয়র রিপোর্টারঃ মরিয়ম আক্তার
আমরা কম বেশি অনেকেই পারোসমিয়া-এর সাথে পরিচিত।
পারোসমিয়া এমন একটি শব্দ যা স্বাস্থ্যের অবস্থার বর্ণনা দিতে ব্যবহৃত হয় যা আপনার গন্ধকে বিকৃত করে। আপনার যদি প্যারোসেমিয়া হয় তবে আপনি ঘ্রাণটির তীব্রতা হারাতে পারেন, এর অর্থ আপনি আপনার চারপাশের সুগন্ধীর পুরো পরিসীমা সনাক্ত করতে পারবেন না। কখনও কখনও প্যারোসিমিয়া আপনার প্রতিদিন মুখোমুখি জিনিসগুলির কারণ হিসাবে মনে হয় যে এগুলির একটি দ্বিমত গন্ধ আছে।
আর করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে অনেকেই স্বাদ বা গন্ধ সাময়িকভাবে হারিয়ে ফেলে। কিন্তু যখন তারা সুস্থ হয়ে ওঠে, তখন স্বাভাবিকভাবে আবার মুখের স্বাদ বা গন্ধ তারা ফিরে পায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এখন ভিন্ন ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, খাবার, সাবান বা প্রিয়জনের গন্ধ যেখানে আগে দারুণ মনে হতো, করোনামুক্ত হয়ে সব কিছুই তীব্রভাবে বিস্বাদ হয়ে পড়ছে। আর এটিকেই বলা হচ্ছে পারোসমিয়া, যাতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
যদিও বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন যে কেন এটি হচ্ছে, আর এর সমাধানই বা কী। ক্লেয়ার ফ্রির তেমনই একজন, যিনি এখন পরিবারের জন্য রান্নার চেষ্টা করলেই সেটি শেষ পর্যন্ত কান্নায় রূপ নিচ্ছে। তিনি বলছিলেন, ‘গন্ধ আমাকে হতবিহ্বল করে তোলে। একটি পচা গন্ধে ঘর ভরে যায় এবং এটা অসহ্য।’
ভীত ও হতভম্ব ক্লেয়ার ঘ্রাণশক্তি হারানো বিষয়ক চ্যারিটি অ্যাবসেন্টের মাধ্যমে একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে, যার সদস্য প্রায় ছয় হাজার। তাঁদের প্রায় সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঘ্রাণশক্তি হারিয়েছিলেন, পরে পারোসমিয়ায় আক্রান্ত হন।
অ্যাবসেন্ট প্রতিষ্ঠাতা ক্রিসসি কেলি বলছেন, তাঁদের বিভিন্ন ধরনের পারোসমিয়া রয়েছে। অনেক সময় তাঁরা গন্ধ কেমন পাচ্ছেন, সেটা বোঝানোও কঠিন হয়ে পড়ে তাঁদের কাছে। কারণ এর আগে এমন কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় বর্ণনার জন্য যথাযথ শব্দও তাঁরা খুঁজে পান না।
রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. জেন পার্কার পারোসমিয়া নিয়ে আগে থেকেই পড়াশোনা করছিলেন। অ্যাবসেন্ট পারোসমিয়া ফেসবুক গ্রুপের অনেকের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি ও তাঁর দল। তাঁরা বলছেন, কফি, সবজি, ফল, ট্যাপের পানি ও মদের পাশাপাশি মাংস, পেঁয়াজ, রসুন বা চকোলেটও খারাপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। পার্কারের গবেষণায় পাওয়া গেছে যে খারাপ গন্ধ পারোসমিয়ার সঙ্গে থেকে যেতে পারে অস্বাভাবিক লম্বা সময়ের জন্য।
সূত্র : বিবিসি।