বিশেষ প্রতিবেদনঃ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পেসেন্ট কেয়ারদের বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধিনে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সের রেজিষ্ট্রেশন দেয়ার অপচেষ্টায় ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার্ড নার্সরা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে দেশের প্রায় ৭০ হাজার রেজিস্ট্রার্ড নার্স ও ৫০ হাজারেরও বেশি নার্সিং শিক্ষার্থী ও পেশাজীবি নার্স সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ছবিঃ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাব সিদ্ধান্ত
গত ২৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের একটি সভায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসব পেসেন্ট কেয়ারদের নার্সিং কাউন্সিলের অধিনে অনুষ্ঠিতব্য কমপ্রিহেনসিভ লাইসেন্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণের শুপারিশ করে। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলকে। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়। কমপ্রিহেনসিভ লাইসেন্স পরীক্ষায় যেসকল পেসেন্ট কেয়ার টেকনোলজিস্ট পাশ করবে তাদের ৬ মাস থেকে ১ বছর মেয়াদি নার্সিং প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
এমন সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হবার পরপরই দেশজুড়ে নার্সদের মাঝে তীব্র নিন্দা ও এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা জানায়। সচেতন নার্সরা এটাকে পেশার ধ্বংস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা মনে করেন, এমন সিদ্ধান্ত দেশের স্বাস্থ্য সেবার সকল অর্জন নষ্ট করে দিবে। কারন হিসেবে তারা জানায়, রেজিষ্ট্রার্ড নার্সরা এইচএসসি পাশ করার পরে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সে তাত্বিক ও একাডেমিক পরাশুনা করে এবং সমস্ত শিক্ষাকালে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশুনা করে মেডিকেলের সকল বিষয়ে এবং নার্সিং বিষয়ে বিস্তর জ্ঞান অর্জন করে।
অপরদিকে কারিগরি বোর্ডের মাধ্যমে এসএসসি যেকোনো বিষয়ে নূন্যতম জিপিএ নিয়ে সামান্য কয়েকটি বিষয়ে বাংলায় পরাশুনা করে। অভিযোগ আছে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও পাশ করা যায় কারিগরিতে। আর নূন্যতম জ্ঞান নিয়ে দেশের মানুষের সাথে সেবার নামে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনটাই অভিযোগ নার্সদের। তাছাড়া দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষিায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে নার্সরা। কারিগরি থেকে এসকল শিক্ষার্থীরা নার্সিং পেশায় আসলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা ভেঙে পড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং পেশার উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচী গ্রহন করেছেন। কিন্তু কিছু সুবিধাবাদী আমলারা প্রধানমন্ত্রীর এসকল উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতেই নার্সিং পেশার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে মরিয়া হয়ে আছে।
ঢাকা মেডিকেলের এক নার্স নেতা জানায়, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছেন তারা। যেকোনো সময় দেশব্যাপী কঠিন আন্দোলনের ঘোষনা আসতে পারে। এমনকি করোনাকালীন কর্মবিরতিতে যেতেও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। ইতিমধ্যে কয়েকটি ঘরোয়া সভাও সম্পন্ন হয়েছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন নার্সিং পেশার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। বারবার অনুরোধের পরও তারা নার্সদের দাবী না মানায় এবার কঠোর হতে যাচ্ছে তারা। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পেশার দুর্দিনে সকলকে পাশে থাকতে আহবান জানান তারা।