স্টাফ রিপোর্টার:রাবিয়া আক্তার মীম |
২০/৯/২০২০.
দেশ জূড়ে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছেন এবং মৃত্যু ভয়কে পিছনে ফেলে আক্রান্তদের সবচেয়ে কাছে গিয়ে যারা সেবা দান করছেন তারা হলেন নার্স বা সেবিকা।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রুখে দিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এইসব নার্সরা।আক্রান্ত রোগীর ধরা ছোঁয়ার মধ্যে থেকেও তাদেরকে নিরলস ভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
সংক্রমণ রোধে পর্যাপ্ত পোশাক-পরিচ্ছেদ ও ব্যবহার্য সামগ্রী কিছুই নেই তাদের।মনে নানা শঙ্কা এবং দায়িত্ববোধের কারণে পিছিয়ে যেতে চাচ্ছেন না।শঙ্কিত পরিবার পরিজন কর্তব্য ও কাজে বাধা দিচ্ছেন।কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্যেও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে–কিন্তু দায়িত্ববোধ,সেবাব্রত আর মানবিকতাবোধ তাদেরকে
কর্মস্থলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ঝুঁকিতে নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই নার্সরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।ঝুঁকি জেনেও দায়িত্ব থেকে পিছপা হননি তারা।
কর্মস্থলে পর্যাপ্ত মাস্ক,গ্লাভস,অ্যাপ্রন,জীবাণুনাশক নেই,করোনা ঝুঁকি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার নিশ্চিত কোনো ব্যবস্থাও গড়ে তোলা যায়নি।
অনেক ক্ষেত্রে করোনা রোগীর আত্মীয়স্বজনরা পর্যন্ত পালিয়ে যাচ্ছে,করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশটাও গ্রহণ করছে না কেউ। কিন্তু নার্সরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও মানবিকতা নিয়ে স্বজনদের মতোই দায়িত্ব পালন করে চলছে।
হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার-নার্সদের সবার কাছে এখনও পিপিই সুবিধা পৌঁছেনি,তারা সাধারণ অ্যাপ্রন,মাস্ক,গ্লাভস ব্যবহার করেই আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের সেবা দিয়ে চলছেন।ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে ভাইরাস জেনে বুঝেও আক্রান্ত রোগীর গা ঘেঁষেই চলছে তাদের দায়িত্ব পালন।
করোনায় আক্রান্ত রোগী আসার খবর শুনে চিকিৎসাধীন অন্য গুরুতর রোগীরাও যখন হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান,তখনও নার্সদের হাসপাতাল ত্যাগ করা নিষিদ্ধ।চরম ঝুঁকি নিয়েই করোনা রোগীর সেবা দানে বাধ্য হচ্ছেন নার্সরা।
ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট গুলো দেখে ওষুধপথ্যের পেসক্রিপসন লিখে খালাস হলেও রোগীর গা ছুঁয়ে ইনজেকশন দেওয়া,ওষুধপথ্য সেবন করোনার ঝুঁকি চাপে নার্সদের কাঁধে।দায়িত্ববোধ,মনোবল আর সচেতনতাকে পুঁজি করেই তারা ছুটে চলছেন মরণঘাতী ভাইরাসটির সঙ্গে সঙ্গে।
প্রতিটি দুর্যোগে দেশের ক্রান্তিকালে সবচেয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।অনেকের কাছে চরম ঘৃণিত,পান থেকে চুন খসলেই গালাগাল শোনা নার্সরাই আজ রোগীদের চরম বিপদের সময় রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।প্রতিনিয়ত মরার ঝুঁকি নিয়ে সেবা প্রদান করেছেন রোগীদের।গোল্লায় যাক তাদের পরিবার তবুও রোগীদেরকে ছেড়ে তারা পালিয়ে যাচ্ছেন না।