👤স্টাফ রিপোর্টার-জাহিদ হাসান,ঢাকা🕛৩০.০৮.২০২০ঃ-
সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও শোকাবহ এক দিন আজ। হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ আজ রোববার। আরবি ‘আশারা’ শব্দের অর্থ দশ। আর আশুরা মানে দশম। ইসলামি পরিভাষায়, মহররমের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলে। সৃষ্টির শুরু থেকে মহররমের ১০ তারিখে তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ফলে আশুরার মর্যাদা ও মাহাত্ম্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
হিজরি ৬১ সালের এই দিনে ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শহীদ হয়েছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। বিশ্বের মুসলমানদের কাছে দিনটি একদিকে যেমন শোকের, তেমনি হত্যা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার চেতনায় উজ্জ্বল।
তবে কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসে এই দিনে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। হজরত মুসা (আ.) ফেরাউনের জুলুম থেকে এই দিনে পরিত্রাণ লাভ করেছিলেন তাঁর অনুসারীদের নিয়ে নীল নদ পার হয়ে। তাঁদের পেছনে থাকা ফেরাউন সদলবলে নীল নদে ডুবে যায়। এমন অনেক তাৎপর্যময় ঘটনা ঘটেছিল এই দিনে।
আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, কারবালার শোকাবহ ঘটনা অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলার প্রেরণা জোগায়।পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
হিজরি ৬১ সালে ইমাম হোসাইন (রা.) ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর সঙ্গে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে সপরিবার শহীদ হন। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শ সমুন্নত রাখতে ইমাম হোসাইন (রা.)–এর এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। এই অনন্য দৃষ্টান্ত শত শত বছর ধরে ন্যায় ও কল্যাণের প্রতিষ্ঠায় মানুষকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে আসছে।
করোনার বৈশ্বিক মহামারির প্রেক্ষাপটে এই দিনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর কাছে এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করবেন। সাধারণত ৯ মহররম রাত থেকেই আশুরার বিশেষ ইবাদত–বন্দেগি শুরু হয়। অনেকেই আজ নফল রোজা রাখবেন। দান–খয়রাত করবেন। আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার আশায় বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করবেন, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করবেন ও জিকিরে নিবেদিত থাকবেন।
করোনার সংক্রমণের কারণে এবার রাজপথে তাজিয়া মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আশুরা উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি থাকবে। এদিকে আশুরা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল শনিবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক জিলানী। এ সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার, আনিছুর রহমান সরকারসহ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।